ছবি সংগৃহীত।
মাঝে মাত্র দু’বছর। এর মধ্যেই শালবনি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে হাত গুটিয়ে নিল জিন্দল গোষ্ঠী।
করোনা হাসপাতালে (লেভেল- ৪) রূপান্তরিত হচ্ছে শালবনি সুপার স্পেশালিটি। এক-দু’দিনের মধ্যে তা চালু হবে। তার আগেই এই হাসপাতাল পরিচালনার ভার ছেড়ে দিল জিন্দলরা। স্বাস্থ্য দফতরই হাসপাতাল পরিচালনা করবে, আগের মতো। জানা যাচ্ছে, হাসপাতাল পরিচালনা থেকে সরে আসতে চেয়ে জিন্দল গোষ্ঠী রাজ্যকে চিঠি দিয়েছিল। সম্মতি মিলেছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের হাতেই হাসপাতাল পরিচালনার ভার থাকছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলও বলেন, ‘‘জিন্দলরা নিজেরাই ওই ভার ছেড়ে দিতে চেয়েছে। আমরা কাজ শুরু করেছি।’’
চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি শালবনির এই হাসপাতালের ম্যানেজার রূপেশ মল্লিকের সঙ্গে। আর জিন্দলদের শালবনি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অয়ন দাস বলেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলতে পারব না। তবে আমরা নন- কোভিড হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এখন তো হাসপাতালটা কোভিড হাসপাতাল হয়ে যাচ্ছে। এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশও বেরিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: উদ্বেগ বাড়িয়ে কোভিডের পাশাপাশি ডেঙ্গি হানা রাজ্যে
পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এর মধ্যে শালবনি অন্যতম। শুরুতে অন্য হাসপাতালের মতো শালবনি সুপার স্পেশালিটি পরিচালনার ভার স্বাস্থ্য দফতরের হাতেই ছিল। পরে পরিচালনার ভার চলে যায় জিন্দল গোষ্ঠীর হাতে। বছর দুয়েক আগে, ২০১৮ সালের শুরুতে শালবনিতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন সজ্জন জিন্দল। তখনই এই হাসপাতালের দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন জিন্দলরা। সম্মতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। সামাজিক দায়িত্ব পালনের প্রকল্পেই (সিএসআর) এই হাসপাতাল চালাচ্ছিলেন জিন্দলরা। তখন চিকিৎসক মহলেই প্রশ্ন উঠেছিল, মানুষের করের টাকায় সরকারের তৈরি হাসপাতাল কেন জিন্দল গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে?
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছুঁতে চলেছে, এক দিনে আক্রান্ত ৪৪০
বৃহস্পতিবার বিকেলে আবার শালবনি সুপার স্পেশালিটির সামনে স্থানীয় কয়েকজন বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মহিলাই ছিলেন বেশি। তাঁদের দাবি, এখানকার সাধারণ রোগীদের জন্য অন্য চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি না করে সুপার স্পেশালিটিকে করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা যাবে না।
এ দিন হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে একাধিক স্বাস্থ্য আধিকারিক ঘেরাও-বিক্ষোভের মুখে পড়েন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। প্রশাসনের আশ্বাস, অদূরে শালবনি গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে। সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকবে।