মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ফাইল চিত্র।
বাঁকা পথে হাঁটাহাঁটির হরেক তথ্য লোপাট করতেই তিনি নিজের মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার আইনজীবী আদালতে বললেন, ‘‘আমার মক্কেলের মেয়ে শিলিগুড়িতে পড়াশোনা করেন। বাবার সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথাবার্তা বলেন প্রায়ই। সিবিআইয়ের তল্লাশি চলাকালীন বার বার মেয়ের ফোন আসছিল বলেই বিধায়ক বিরক্ত হয়ে মোবাইল ফেলে দিয়েছিলেন।’’
পুকুরে মোবাইল ফেলার ঘটনা নিয়ে বিস্তর হইচই হয়েছে। মোবাইল পুকুরস্থ করার কারণ হিসেবে ধৃত বিধায়কের কৌঁসুলি যা বলেছেন, তা নিয়েও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত জীবনকৃষ্ণকে এ দিন আদালতে তোলে সিবিআই। ওই বিধায়কের কৌঁসুলি তাঁর জামিনের আর্জি জানিয়ে বলেন, ‘‘ওঁকে প্রশ্ন করা হচ্ছে হিন্দিতে, উনি উত্তর দিচ্ছেন বাংলায় আর তা লেখা হচ্ছে ইংরেজিতে। উনি এক জন বিধায়ক। ওঁর রাজনৈতিক সম্মান আছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওঁর উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। জামিন যদি না-হয়, ওঁকে জেল হেফাজতে পাঠানো হোক।’’
সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “ওই বিধায়কের বাড়িতে নিয়োগ দুর্নীতির প্রচুর নথি পাওয়া গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ওঁর মূল এজেন্ট কৌশিক ঘোষ জেলবন্দি। তাঁর বয়ান থেকেই বিধায়কের বিরুদ্ধে সমস্ত রকম তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে।’’
জীবনকৃষ্ণের আইনজীবীর দাবি, ‘‘নথি যা উদ্ধার হয়েছে, তা বিধায়কের বাড়িতে নয়, বাগানে পাওয়া গিয়েছে। তিনি রাজনৈতিক নেতা। শত্রুতার বশে অন্য কেউ বা কারা সেই সব নথি ফেলে দিয়ে গিয়েছে। বিধায়ক ওই নথির বিষয়ে কিছুই জানতেন না।’’ বিচারক সিবিআইয়ের কৌঁসুলিকে প্রশ্ন করেন, ওই বিধায়ককে যে গ্রেফতার করেছেন, তা বিধানসভার স্পিকারকে জানিয়েছেন কি? কৌঁসুলি বলেন, ‘‘চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’’ জীবনকৃষ্ণকে ফের চার দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আলিপুর বিশেষ আদালতের বিচারক।
শিশুপুত্রকে নিয়ে জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী টগরি আদালতে এসেছিলেন। স্বামীর সঙ্গে কথা বললেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। ‘‘স্ত্রীকে বিরক্ত না-করাই ভাল,’’ বলেন জীবন।