ছবি সংগৃহীত
কেএলও-র প্রধান জীবন সিংহ এখন কোথায় রয়েছেন?
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ এখন এই নিয়েই খোঁজ শুরু করেছে। সূত্রের দাবি, সেই লক্ষ্যেই জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে প্রাক্তন জঙ্গিদের ব্যবহার করতে চাওয়া হচ্ছে। ওই সূত্রের দাবি, সে জন্য গত এক মাসে বেশ কয়েক জন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিকে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে দু’জন দেখা করেন বলে জানা গিয়েছে। এক জন আসতে আগ্রহ দেখাননি। আরও এক জনের এর মধ্যে কলকাতায় আসার কথা। কিন্তু প্রাক্তন জঙ্গিদের অনেকেরই দাবি, তিনিও আসবেন না। এর ফলে জীবন কোথায় আছেন, সেটা নির্দিষ্ট করা এবং তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার কাজ আপাতত ধীর লয়ে চলছে বলেই দাবি। তবে এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘আমরা জীবনকে হাতে পেতে চাইছি। তাই সব দিক থেকেই সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, জীবন সিংহ এখন মায়ানমার-ভারত সীমান্তে একটি জঙ্গলে ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন। সেখান থেকেই ভিডিয়ো বার্তা পাঠাচ্ছেন বিশেষ করে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এলাকায় নিজের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে। গোয়েন্দারা আরও জানতে পেরেছেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জীবন ও তাঁর সঙ্গীদের সাহায্য করছে। গোয়েন্দাদের মতে, সেটা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে
সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম চালানোর সময়েও আলফার মতো সংগঠনগুলি তাদের সাহায্য করেছিল, বলছেন গোয়েন্দারা।
প্রাক্তন জঙ্গিদের কয়েক জন আবার দাবি করছেন— কেউ কেউ মনে করেন, জীবন এখন ভারতে ঢুকে উত্তর-পূর্বের কোনও জঙ্গল এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে আছেন। তাঁদের আরও দাবি, তাই জীবনের সঙ্গে আরও বেশি করে যোগাযোগ করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। যদিও এক প্রাক্তন কেএলও জঙ্গির মতে, ‘‘উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও জঙ্গলে জীবন আছেন বলে মনে হয় না। তিনি এই দেশে ‘ওয়ান্টেড’। তাই এই সব জায়গায় লুকিয়ে থাকাটা ওঁর পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে।’’ প্রাক্তন কেএলও-দের মতে, জীবনের গতিবিধি সম্পর্কে তাঁরা সত্যি অন্ধকারে।
তবে গোয়েন্দারাও বসে নেই। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, এক সময়ে কেএলও আন্দোলনকে কড়া হাতে দমন করতে যে অফিসারেরা কাজ করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই আবার সক্রিয়। তাঁদের বেশির ভাগেরই ধারণা, জীবন উত্তর-পূর্ব ভারত ঘেঁষা মায়ানমারের জঙ্গলে রয়েছেন। সেখান থেকেই নানা ভাবে দেশে তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীলদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। সূত্রের দাবি, এ সব অঙ্ক ধরেই জীবনের কাছে ‘পৌঁছতে’ চাইছেন গোয়েন্দারা।