ছবি: পিটিআই।
সর্দি রয়েছে। মাঝেমধ্যে হাঁচি-কাশি হচ্ছে। গা গরম। শরীর ম্যাজম্যাজ করছে। তবু মিলছে না ছুটি। হচ্ছে না নমুনা পরীক্ষা। করোনা আবহে নানা উপসর্গকে সঙ্গী করে তেমন অভিযোগ করছেন বঙ্গের বিভিন্ন সংশোধনাগারের কর্মীরা। তবে সে অভিযোগ মানতে নারাজ কারা দফতর। তাদের দাবি, কর্মীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন সংশোধনাগারকে তালিকা-সহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশোধনাগারের কর্মী, আধিকারিকেরা সংক্রমিত হয়েছেন। কয়েকজন বন্দির নমুনা রিপোর্টও পজ়িটিভ। তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয় বলে দাবি কারা দফতরের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকেরা। সংক্রমিত হওয়া সংশোধনাগারের কর্মী-আধিকারিকরা সেরে উঠেছেন। আক্রান্ত বন্দিরাও ভাল রয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।
সংশোধনাগারের দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনার অন্যতম স্তম্ভ কারারক্ষীরা। তাঁরা অভিযোগ করছেন, জ্বর রয়েছে। অথচ তাঁকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে না। বরং জ্বরহীন কর্মীর সঙ্গে জ্বর নিয়েই থাকছেন কেউ কেউ। অনেকের হাঁচি-কাশি আকছার হচ্ছে। সে সব জানানো হলেও কোনও কোনও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করছেন না বলে অভিযোগ। ‘‘ আইসোলেশন তো দূর অস্ত! নমুনা পরীক্ষা নিয়েও গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।’’—অভিযোগ এক কারা কর্মীর। আরেক কর্মীর অভিযোগ, ‘‘শরীর খারাপের কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ছুটিও পাওয়া যাচ্ছে না।’’ সেই পরিস্থিতির মধ্যে কর্মীদের অনেকে বাড়ি ফিরে স্থানীয় স্তরে নমুনা পরীক্ষা করাতে ‘বাধ্য’ হচ্ছেন বলে দাবি কারারক্ষীদের কয়েক জনের। ঘটনাচক্রে, অভিযোগকারী রক্ষীরা যে সব জেলার সংশোধনাগারে কর্মরত, সেইসব জেলায় সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী।
রক্ষীদের অভিযোগ মানতে নারাজ কারা দফতরের কোনও কোনও আধিকারিক। তাঁদের মতে, সংশোধনাগারে নমুনা সংগ্রহ নিয়ম মেনে হচ্ছে। দু’বার হাঁচি-কাশি হওয়ার জন্য ছুটি দিতে হলে সংশোধনাগার পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে কর্মীর সংখ্যা কম থাকার কথাও মনে করাচ্ছেন কোনও কোনও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। তেমন এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে পরিমাণ ছুটির আবেদন আসছে, তা গ্রাহ্য করলে সংশোধনাগারের দৈনিক কাজকর্ম করা সম্ভব হবে না।’’ করোনা আবহে ‘ছুটি’ যে নিরাপদ অবস্থান, তা মানছেন আধিকারিকদের একাংশও।