ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি জারির পর সাত দিন কেটে গেলেও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব এখনও নেয়নি সিআরপিএফ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে দাবি, নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে জয়েন্ট সিকিওরিটি রিভিউ মিটিং (জেএসআর) করতে চেয়েছিল সিআরপিএফ। এখনও রাজ্য পুলিশের সাড়া মেলেনি। সে কারণে ধনখড়ের নিরাপত্তার দায়িত্বও নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় বাহিনী।
গত ১৫ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিআরপিএফ’কে রাজ্যপালকে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। নয়ডার সিআরপি’র ২৩৫ ভিএস ব্যাটেলিয়নের উপর সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পরই সংশ্লিষ্ট ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট রাজ্য পুলিশকে বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক করতে অনুরোধ করেন। গত ১৮ অথবা ১৯ অক্টোবর বৈঠক চেয়ে দিল্লি থেকে সিআরপি’র পদস্থ কর্তারাও কলকাতা আসেন। রাজ্য পুলিশের ভিআইপি নিরাপত্তা ডিরেক্টরেটের অফিসারদের সঙ্গে দেখাও করেন সিআরপি কর্তারা। কিন্তু ওই নির্দিষ্ট বৈঠক হয়নি। গত ২১ অক্টোবর বিকেল চারটের সময় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও, রাজ্য পুলিশ জানিয়ে দেয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে থাকায় কোনও সিনিয়র অফিসার কলকাতায় নেই। ফলে পর্যালোচনা বৈঠক করা যাচ্ছে না।
সিআরপি’র এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এখনও নির্দিষ্ট বৈঠকটি হয়নি। ফলে রাজ্যপালের নিরাপত্তার ভারও আমরা হাতে নিতে পারেনি। রাজ্য পুলিশ নীতিগত অবস্থান ঠিক করে নিশ্চয় বৈঠকে আসবে। এই আশা রেখে আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করছি।’’ আর নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্যপালের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা নীতিগতভাবে মানি না। কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে রূপায়ণের দায়ও তাদের। সর্বোচ্চ অনুমতি পেলে তবেই পুলিশ সিআরপি’র সঙ্গে বৈঠকে বসবে।’’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘যাদবপুর কাণ্ডের পর রাজ্যপালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা রিপোর্ট দিয়েছিল। রাজ্যপালের সচিবও গত ২ অক্টোবর রাজ্যকে চিঠি লিখে ধনখড়ের নিরাপত্তা জেড-প্লাস স্তরে উন্নীত করার কথা বলেছিল। ১৫ দিনেও রাজ্যের তরফে জবাব আসেনি। ফলে রাজ্যপালের নিরাপত্তার ঝুঁকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিতে পারেনি।’’ কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে কি মন্ত্রক সরাসরি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলায় হস্তক্ষেপ করছে না? ওই কর্তার জবাব, ‘‘ভিআইপি নিরাপত্তা আইনশৃঙ্খলার চেয়ে পৃথক। সেই কারণেই এসপিজি বা এনএসজি তৈরি হয়েছে। এরা কেউই পুলিশ বাহিনী নয়।’’
যৌথ পর্যালোচনার প্রয়োজন কোথায়? সিআরপি কর্তারা জানাচ্ছেন, মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী নিরাপত্তা ভার নেওয়া বড় ব্যাপার নয়। কিন্তু রাজ্যপালের নিরাপত্তা কী ভাবে দেওয়া হবে, ঝুঁকি কী কী, পুলিশের ভূমিকা কী হবে, সমস্যায় পড়লে কেন্দ্রীয় বাহিনী কার সঙ্গে যোগাযোগ করবে, পাইলট-এসকর্ট কার কারা দেবে, মাওবাদী এলাকায় গেলে রুট পেট্রলিং কারা করবে— এ সব নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সে জন্য পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন।