Jagdeep Dhankhar

প্রজাতন্ত্র দিবসের বার্তায় ধনখড়ের নিশানায় মমতাই

কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ঘুরিয়ে রাজ্যবাসীর প্রতি ‘অবিচার’-এর অভিযোগও জগদীপ ধনখড় তুলেছেন।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৫১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

প্রজাতন্ত্র দিবসের বার্তায় আগাগোড়া রাজ্য সরকার ও শাসক দলকে বিঁধলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শুরু করে আমলাদের কাজকর্ম নিয়েও শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ঘুরিয়ে রাজ্যবাসীর প্রতি ‘অবিচার’-এর অভিযোগও তিনি তুলেছেন।

Advertisement

শনিবার প্রকাশিত এই বার্তায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই। অথচ গত কয়েক বছর পরিবেশ ছিল উদ্বেগজনক।’’ ধনখড়ের আহ্বান, ‘‘আসুন, সকলে মিলে ২০২০ সালে আমাদের রাজ্যকে শান্তিপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরি।’’ এ দিনের বার্তায় রাজ্যপাল যে ১০টি মৌলিক কর্তব্যের কথা উল্লেখ করেছেন, সেখানে আরও নির্দিষ্ট করে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা ও হিংসা থেকে বিরত থাকার কথাও বলেছেন। এই সূত্রেই রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যাতে বিদ্যাচর্চার মন্দির হিসেবেই থাকে, আমাদের সকলের সেই লক্ষ্যে কাজ করা উচিত। গর্ব করার মতো বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আমাদের।’’

শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য রাজ্যপালের এই বার্তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে এ সব নিয়ে কোনও কথা বলব না। শুধু বলব, আমরা যে যেখানে আছি, সকলেরই বিভেদহীন, বিভাজনহীন সমাজ রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করা উচিত। এই দিনেই সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলেই শপথ নিই সংবিধান রক্ষার।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কাঁটায় ‘বন্দি’ ফুলবাড়ি

কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাতের দিকে ইঙ্গিত করে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর এই প্রকল্প চালু হলেও তখন থেকে আমাদের কৃষকেরা তাঁদের জন্য বরাদ্দ ৪০০০ কোটি টাকা পাননি।’’ এই কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু না হওয়ায় রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘কৃষকদের প্রতি এই অবিচার বন্ধ হওয়া উচিত।’’ রাজ্য সরকারের কথা উল্লেখ না করলেও রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘কৃষকরা যাতে তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় হওয়া উচিত।’’

এই উপলক্ষেই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের কথা টেনে রাজ্যপাল এ দিন বলেছেন, ‘‘দুই সরকারের মধ্যে সংঘাত কোনও কাজের কথা নয়। পরস্পরের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করা উচিত উভয়েরই।’’ তাঁর মতে, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বিরোধের মীমাংসা আমাদের সংবিধানেই রয়েছে।’’ তার পরই তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের দূরত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘সাংবিধানিক পদে থাকা সকলেরই নিজের নিজের সীমার মধ্যে কাজ করা উচিত। তাঁদের পরস্পরের মধ্যে শ্রদ্ধার সম্পর্ক না থাকলে গণতন্ত্রে ফাঁক ও দাগ তৈরি হয়।’’ সরকারি কর্মীদের রাজনীতি-নিরপেক্ষ অবস্থানের প্রয়োজন উল্লেখ করে রাজ্যপাল ওই বার্তায় বলেছেন, ‘‘সরকারি অর্থ রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য নয়। এই রকম ঘটনা দেখা যাচ্ছে। তা আমাদের নজরে আসা উচিত।’’ এই বার্তার একেবারে শেষ অংশে পরমতসহিষ্ণুতার পরামর্শও দিয়েছেন রাজ্যপাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement