রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
ন’দিন আগে পেগাসাস কাণ্ডে রাজ্য সরকারের তদন্ত কমিশন সংক্রান্ত নথিপত্র ও বিজ্ঞপ্তি চেয়েছিলেন তিনি। না-পেয়ে দিন পাঁচেক আগে মুখ্যসচিবকে বিষয়টি মনেও করিয়ে দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও সেগুলো না-পেয়ে তিনি কতটা ক্ষিপ্ত, বুধবার টুইটে সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ওই টুইটে তিনি লিখেছেন, ফোনে আড়ি পাতা (পেগাসাস) কাণ্ডের তদন্তে রাজ্যের কমিশন গঠনের সরকারি পদ্ধতিগত নথি রাজভবনে পাঠানোর জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব-সহ প্রশাসনের শীর্ষ মহলকে ‘ফাইনাল অপারচুনিটি’ বা ‘শেষ সুযোগ’ দিচ্ছেন তিনি। এই বিষয়ে আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে তথ্যাদি পাঠাতেই হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।
পেগাসাস-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন ভীমরাও লকুর এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে রাজ্য সরকার। সেই কমিশন ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে। এই সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র গত ৬ ডিসেম্বর চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজভবন। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তা রাজভবনে পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছিল। রাজ্যপালের অভিযোগ, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বিষয়টিতে কর্ণপাত করেননি। গত ১১ ডিসেম্বর মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তখনও তাঁদের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের তরফে উচ্চবাচ্য করা হয়নি। তাই রাজ্যপাল এ দিন সময় বেঁধে ‘শেষ সুযোগ’ দিয়ে টুইটাস্ত্র হেনেছেন বলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পর্যবেক্ষক শিবিরের একাংশের অভিমত।
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল নিজেকে ক্রমাগত রাজ্য সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলছেন। এই সরকারটা যে তাঁরও, তিনি তা ভুলে যাচ্ছেন। কোন দায় থেকে তাঁর এই ভূমিকা, তা জানতে ইচ্ছে করে। তথ্য দেওয়া বা নেওয়া— যা হবে, সেটা হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই। তার বাইরে নয়।’’
সুপ্রিম কোর্টও পেগাসাস নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছে। রাজ্যেও তদন্ত কমিশন তাদের কাজ চালাচ্ছে। নোটিস পাঠানো হয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গাঁধী-সহ অনেকের কাছেই। এ-পর্যন্ত অন্তত ২১ জনের কাছে নোটিস পাঠিয়ে এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানাতে বলেছে কমিশন। বিষয়টির অনুসন্ধানে সাইবার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও আলোচনা করছে কমিশন।