জগন্নাথের গাড়িতে বোমা হামলার পর রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে নালিশ জানিয়েছিল বিজেপি। এর পরেই রিপোর্ট তলব করে অমিত শাহর দফতর।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা হারিয়েছিলেন রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তবে শনিবার নিজের লোকসভায় এলাকায় তাঁর গাড়িতে বোমা হামলার পরে হারানো নিরাপত্তা ফিরে পেতে পারেন তিনি। এমনটাই আশা করছে রাজ্য বিজেপি। জানা গিয়েছে, শনিবার রাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে নালিশ জানিয়েছিল বিজেপি। আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রিপোর্ট তলব করে অমিত শাহর দফতর। রাজ্য পুলিশের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে রবিবার বিকেলে তা দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্টের সঙ্গে সঙ্গে জগন্নাথকে যাতে ফের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়, সেই আবেদনও করা হয়েছে। তবে আপাতত জগন্নাথ থাকবেন কলকাতায়। শহরের দক্ষিণে একটি অতিথিশালা ভাড়া নিয়ে রানাঘাটের সাংসদের থাকার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য বিজেপি।
রবিবার কলকাতায় এসে গিয়েছেন জগন্নাথ। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আগে থেকেই আমি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। শনিবারের ঘটনার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আমি পুলিশের রিপোর্ট পেয়ে তা দিল্লিতে পাঠিয়ে দিয়েছি।’’ আপাতত কলকাতায় থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে দল আমাকে পর্যবেক্ষক করেছে। সেই কারণে আমার কলকাতায় থাকাটা জরুরি। তাই কলকাতায় চলে এসেছি।’’ বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ এপ্রিল হতে চলা উপনির্বাচনের জন্য জগন্নাথকে কলকাতায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া হলেও আরও কয়েকটা দিন পরে তাঁর আসার কথা ছিল। শনিবারের ঘটনার পরে তিনি রবিবার থেকেই কলকাতায় থাকবেন।
প্রসঙ্গত, সাংসদ হওয়ার পর থেকে এক্স ক্যাটেগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেতেন জগন্নাথ। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দু’জন রাজ্য পুলিশের সশস্ত্রকর্মীও সাংসদের নিরাপত্তায় মোতায়েন ছিলেন। কিন্তু সেটা এই বছরের গোড়ার দিকে তুলে নেয় রাজ্য। এর পরে পরে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও উঠে যায়। তা নিয়ে সম্প্রতি নিজের উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন জগন্নাথ। তাঁকে না জানিয়ে কেন রাজ্য ও কেন্দ্র নিরাপত্তা তুলে নিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জগন্নাথ সেই সময়ে বলেছিলেন, “দু’বার আমার উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। বারাসতের হেলা বটতলার কাছে গাড়ি দুর্ঘটনায় আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। শান্তিপুর ও গয়েশপুরে বিক্ষোভ দেখানোর নামে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমাকে প্রাণে মারারও চেষ্টা করেছে। আমার নিরাপত্তা নিয়ে সত্যই আমি চিন্তিত।” সেই সঙ্গে জগন্নাথ বলেছিলেন, “কেউ না থাক ঈশ্বর তো আছেন। আমার নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁর উপরেই ছেড়ে দিয়েছি।”
শনিবার তাঁর গাড়িতে হামলার পরে জগন্নাথ দাবি করেন, ঈশ্বরই তাঁকে রক্ষা করেছেন। সময়ের একটু এ দিক, ও দিক হলে মারাত্মক কিছু ঘটতে পারত। তবে রবিবার বলেন, ‘‘দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। শনিবারের হামলা বুঝিয়ে দিয়েছে আমার জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। আশা করি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ফিরবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও শনিবার রাত থেকে রাজ্য পুলিশের পক্ষে দু’জন সশস্ত্র রক্ষী দেওয়া হয়েছে তাঁকে। একই সঙ্গে পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে খুনের চক্রান্তের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে।