Jadavpur University Student Death

কারও মৃত্যু কামনা করিনি কোনও দিন, তবে সৌরভের ফাঁসি চাই

ছেলে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে আকুল মা স্বপ্না কুন্ডু। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। চিকিৎসা চলছে তাঁর। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানালেন স্বপ্নদীপকে হারানোর বেদনার কথা।

Advertisement

স্বপ্না কুন্ডু

বগুলা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৪৪
Share:

স্বপ্না কুন্ডু এবং স্বপ্নদীপ কুন্ডু। — নিজস্ব চিত্র।

আমার গোপালকে কোথায় পাব? কারও কষ্ট দেখতে পারত না স্বপ্নদ্বীপ। এক বার ওর পক্স বেরিয়েছিল গায়ে। সেই সময় ও খালি আমাকে বলত, ‘‘মা খুব যন্ত্রণা। এ যেন কারও না হয়।’’ যে ছেলে কারও কষ্ট দেখতে পারত না, সেই ছেলেকে ওরা খুন করল!

Advertisement

আমার চোখের জল দেখতে পারত না স্বপ্নদ্বীপ। আমি কাঁদলে ও চোখের জল মুছিয়ে দিত। বলত, ‘‘মা কেঁদো না। আমি কারও চোখের জল সহ্য করতে পারি না।’’ কিন্তু আমি আজ যে এত কাঁদছি, তুই সহ্য করছিস কী করে বাবা? আমার কিচ্ছু ভাল লাগছে না। এই পৃথিবী আমার কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছে। তোমরা কিছু একটা ব্যবস্থা করো। আচ্ছা, সব জায়গায় যে শুনি পয়সা ছাড়া কাজ হয় না। আমাদের তো পয়সা নেই। ওরা ছাড়া পেয়ে যাবে না তো? টাকা দিলে কি কাজ হবে?

আচ্ছা, সৌরভ, মনোতোষ আরও যারা আছে, তাদের ফাঁসি চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী? আমি কি এক বার ওঁকে বলতে পারব যে, আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসির ব্যবস্থা করুন! সৌরভের কিছু হবে না? আদালতে হয়তো জামিন পাবে। কিন্তু ঈশ্বর ওর কিছু করবেন না? সৌরভের ফাঁসি হলে ওর মায়ের কোল খালি হবে। কিন্তু আমার বুকের জ্বালা মিটবে। আমি কোনও দিন কারও ক্ষতি চাইনি। এই প্রথম চাইছি, কারও মৃত্যু হোক।

Advertisement

আমি সেই দিন রাতেই যেতে চেয়েছিলাম। সৌরভ আমাকে ফোন করে বলল, ‘‘না, সকালে আসুন।’’ কিন্তু ছেলে আমাকে বলেছিল, ‘‘মা খুব ভয় করছে। আমাকে নিয়ে যাও।’’ কিন্তু শুধু ওরা, শুধু ওরা প্ল্যান করে আমাকে যেতে দিল না। ওর ফাঁসি দিতে পারবে তোমরা? একটু ব্যবস্থা করে দাও না! তোমাদের পা ধরে বলছি, সৌরভের কিছু একটা করো তোমরা! সবাইকে ধরবে। কাউকে ছাড়বে না। সৌরভ একা করেনি। এর সঙ্গে একটা গোটা চক্র আছে। সব্বাইকে ধরতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে কথা বলবেন? তোমরা বলে দেখো না? শুধু হাতজোড় করে এক বার বলব, আমার ছেলেকে যারা খুন করেছে তাদের যেন ফাঁসি হয়। কল লিস্ট চেক করো। আমি ফোন করছি। কিন্তু ছেলেকে কেন পাচ্ছি না ভেবে সৌরভকে ফোন করলাম। ও তখন বলল, ‘‘ও (স্বপ্নদীপ) উপরে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছে। কোনও চিন্তা করবেন না।’’ স্বপ্নদীপের মতো আমার আর এক ছেলে রত্নদ্বীপ। দেখো, এদের মুখ কতটা মায়াময়। এরা দুই ভাই দু’জনকে ছাড়া থাকতে পারে না। ওরা দু’জন দু’জনকে ‘ভাই’ বলে ডাকে। স্বপ্নদীপ তো চলে গেল। এখন আমার রত্নদীপকে কে ভাই বলে ডাকবে?

(অনুলিখন: প্রণয় ঘোষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement