যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের কারণে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় ৬ জন অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তবে শনিবার অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। যদিও স্নেহমঞ্জু জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর কর্মসমিতির (ইসি) বৈঠকের প্রস্তাব অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, অভিযোগের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত ওই ৬ জন ক্যাম্পাসে বা হস্টেলে ঢুকতে পারবেন না। প্রসঙ্গত, ওই ৬ জন আপাতত জেলবন্দি। তাই এমনিতেও এখনই তাঁরা ক্যাম্পাসে বা হস্টেলে ঢুকতে পারতেন না। ওই ঘটনায় মোট ১২ জন জেলে আছেন।
যে ৬ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা হলেন অর্থনীতির স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দীপশেখর দত্ত, সমাজতত্ত্বের স্নাতকের দ্বিতীয় বর্ষের মনোতোষ ঘোষ, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের অঙ্কন সরকার এবং মহম্মদ আরিফ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সত্যব্রত রায়। রেজিস্ট্রার এই শাস্তির কথা ঘোষণা করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের বক্তব্য, অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী এই শাস্তি পর্যাপ্ত নয়। কারণ, ওই কমিটি সত্যব্রত, মহম্মদ আরিফ, দীপশেখর এবং মনোতোষের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল। অঙ্কনকে চারটি সিমেস্টার, মহম্মদ আসিফ আফজল আনসারিকে দু'টি সিমেস্টারের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, ‘‘২৬ সেপ্টেম্বরের সিদ্ধান্তের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে ২ মাস পরে। তা-ও যারা এখন জেলে আছে তাদের জন্য। বোঝা যাচ্ছে, কর্তৃপক্ষ আসলে দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন।’’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২৬ সেপ্টেম্বর ইসি-র বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলেও শাস্তির ঘোষণা করতে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ইমনকল্যাণ লাহিড়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের দাবি, শিক্ষকের অনশনের পরে কার্যত চাপে পড়ে তড়িঘড়ি শাস্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যদিও অন্তর্বর্তী উপাচার্য বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন, অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড বৈঠকে বসে রিপোর্ট দিলে তার ভিত্তিতে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।