যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
অভিযোগ উঠেছিল, গত অগস্টে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত ছাত্রকে শুধু মানসিক নয়, শারীরিক অত্যাচারও করা হয়েছে। যৌন হেনস্থারও অভিযোগ উঠেছিল।
ওই ঘটনায় ধৃত ১২ জনের বিরুদ্ধে এ বার চার্জশিট জমা দিল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর,সম্প্রতি আলিপুর আদালতে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা, পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) এবং র্যাগিংয়ের ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তে আরও যদি কিছু উঠে আসে, তাই ‘সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট’ পেশের আবেদনও করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর।
আদালত সূত্রের খবর, হস্টেলে প্রথম দিন থেকে ওই ছাত্রকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, চার্জশিটে জানানো হয়েছে, ওই ছাত্রকে মানসিক বা শারীরিক অত্যাচারে অভিযুক্তদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ ছিল। যার ফলেই প্রথম বর্ষের ছাত্র আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালত সূত্রের খবর, এখন আদালতে ছুটি থাকায় সেই চার্জশিট বিচারকের হাতে পৌঁছয়নি। সাধারণত, চার্জশিট হাতে পেয়ে প্রথমে তা গ্রহণ (কগনিজেন্স) করেন বিচারক। তারপর শুরু হয় শুনানি। ঘটনার পরে যিনি কলকাতায় গিয়ে এফআইআর করেছিলেন, মৃত ছাত্রের সেই মামা বলছেন, “এখনও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলাম না। এ দিকে বলছে আত্মহত্যার প্ররোচনা! কিছুই বুঝতে পারছি না।” আর ছাত্রের বাবা বলেন, “চার্জশিটের বিষয়টি ভাল করে না জেনে এখনই মন্তব্য করব না।”
উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশে আগেই ওই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসোর ধারা যুক্ত হয়। তাঁরা এখনও জেলে রয়েছেন। এই অভিযুক্তরা মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের আবাসিক ছিলেন। তাঁরা সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটি বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল। অভিযোগ ওঠে, বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের অনীহা রয়েছে। ঘটনার আড়াই মাস পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এর মধ্যে পুজোর ছুটিও পড়ে গিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে। পরের দিনই পরিবারের তরফে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। পরিবারের অভিযোগে, র্যাগিংয়ের পাশাপাশি খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরী-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।