—ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরভোটের আগে কাউন্সিলর হিসেবে কি সক্রিয় হতে চাইছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? দুর্গাপুজোয় নিজের ওয়ার্ডে পুরসভার দেওয়া ধুতি, শাড়ি এবং জামাকাপড় বিলি করা নিয়ে শোভনবাবুর আগ্রহ বাড়ায় রাজনৈতিক মহলে এই চর্চা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। আবার বিজেপির প্রতি ‘মোহভঙ্গ’ হয়েছে বলেও ঘোষণা করেছেন।
তবে এখনও কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শোভন। মেয়র ছিলেন ওই ওয়ার্ডের প্রতিনিধি হিসেবেই। বছর খানেক আগে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ার পর বেহালার বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কের কাছে একটি আবাসনে বসবাস শুরু করেন। দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পর গত নভেম্বরে মেয়র পদ ছাড়েন তিনি। তার আগে মন্ত্রিত্বেও ইস্তফা দেন। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সঙ্গেও কার্যত তাঁর যোগাযোগ ছিল না। তৃণমূলের নির্দেশে কার্যত তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় ওয়ার্ডের কাজকর্ম দেখা শুরু করেন। মাস কয়েক আগে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৩০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় এবং আর এক প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জন দাসকে ১৩১ ওয়ার্ড দেখাশুনোর দায়িত্ব দেন।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রতি বছর দুগার্পুজো ও ইদের সময় পুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ওয়ার্ডে ধুতি, শাড়ি এবং জামাকাপড় বিলি করার জন্য দেওয়া হয়। এ বছর ইদের সময়েও তা হয়েছে। দলীয় কর্মীদের মাধ্যমেই তা বিলি করা হয়েছে প্রাক্তন মেয়রের ওয়ার্ডে। তা নিয়ে শোভনবাবুর কোনও আপত্তির কথা তখন জানা যায়নি। সেই মতো দুর্গাপুজোতেও অভিজিৎবাবু পুরভবন থেকে ১৩১ ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ জামাকাপড় তুলে নেন দলীয় কর্মীর মাধ্যমে। সূত্রের খবর, তা জানতে পেরেই এ বার চটে যান শোভনবাবু। শুক্রবার সন্ধে থেকে পুরসভার সোশ্যাল সেক্টরের ম্যানেজার থেকে ওই দফতরের মেয়র পারিষদ ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়, আর এক মেয়র পারিষদ তথা ১৩০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎবাবু এবং পুর কমিশনার খলিল আহমেদকে ফোন করে জানতে চান তাঁর নির্দেশ ছাড়া কেন অন্য জনকে জামাকাপড় দেওয়া হল। নিজের এক অনুগামীকে পুরভবনেও পাঠান তিনি।
অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘শোভনকে বলেছি নিজের ওয়ার্ডের সঙ্গে তোর যোগাযোগ নেই। দলনেত্রী আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। ওয়ার্ডের মানুষ কেন পুজোর সময় জামাকাপড় থেকে বঞ্চিত হবে, সেটা ভেবেই জামাকাপড় দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ মালপত্র অন্যকে দেওয়ার জন্য পুরসভার এক অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুমকিও শোভনবাবু দিয়েছেন বলে অভিযোগ। শোভনবাবু বলেন, ‘‘পদ্ধতি মেনে চলা উচিত। যা করব, পরে দেখতেই পাবেন।’’ তবে পুরসভা সূত্রের খবর, কাউন্সিলর হিসেবে শোভনবাবুর বরাদ্দ জামাকাপড় তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, শোভনের জন্য তৃণমূল এখনও ‘নরম’ পন্থা নেওয়ার পক্ষপাতী।