সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রিতে ফড়েদের দৌরাত্ম্যে প্রান্তিক চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছিল। ফাইল চিত্র।
এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বা ফড়েদের দৌরাত্ম্য রুখতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় বেশ কিছু পদ্ধতি করেছিল খাদ্য দফতর। তা সত্ত্বেও অনিময় এড়ানো যায়নি, এমন তথ্য হাতে এসেছে দফতরের। অন্তত সাতটি জেলায় ধান বিক্রি না করা চাষির অ্যাকাউন্টেও টাকা গিয়েছে বলে জেনেছেন আধিকারিকেরা। চাষিদের ‘জ়িরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খুলিয়ে ব্যবসায়ীরা তার মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়েছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে।
খাদ্য ভবন সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ সপ্তাহ দুয়েক আগে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আধিকারিকদের সন্দেহ হয়। অ্যাকাউন্ট যাচাই করে বেশ কিছু গরমিল মেলে। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে সন্দেহজনক অনেক অ্যাকাউন্টে লেনদেন সাময়িক বন্ধ করা হয়। দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রথমে বীরভূম, পুরুলিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, জলপাইগুড়ি ও হাওড়া জেলায় এমন ঘটনা ধরা পড়ে। শুক্রবার সে তালিকায় যোগ হয়েছে পূর্ব বর্ধমান। এ ছাড়া, কোচবিহার ও মুর্শিদাবাদও নজরে রয়েছে। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে বিশদে বলা যাবে।’’
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রিতে ফড়েদের দৌরাত্ম্যে প্রান্তিক চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছিল। তা আটকাতে জমি পিছু উৎপাদনের রিপোর্ট দেখা, অনলাইনে চাষিদের ধান বিক্রির সময় জানিয়ে দেওয়া-সহ বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তার পরেও এক ব্যক্তি একাধিক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে ধান বিক্রি করেছেন, সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রির নিয়ম থাকলেও অনেকে তার বেশি বিক্রি করে টাকা পেয়ে গিয়েছেন— এমন নানা তথ্য পেয়েছেন আধিকারিকেরা। পূর্ব বর্ধমানে ‘জ়িরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট’ খোলার নাম করে প্রান্তিক চাষিদের নথিপত্র নিয়ে চালকলের সঙ্গে যোগসাজসে ফড়েরা টাকা তুলেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ‘বেঙ্গল রাইসমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘প্রান্তিক চাষিদের সঙ্গে প্রতারণা করে কেউ দুর্নীতি করে থাকলে খাদ্য দফতর ব্যবস্থা নিক।’’