রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য পুলিশের নয়া ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) হলেন রাজীব কুমার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। একটা সময়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীবকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এ বার সেই আইপিএস অফিসারকে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপাতত তিনি ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসেবেই কাজ করবেন।
কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব বর্তমানে তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিবের পদ সামলাচ্ছিলেন। বুধবার একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে রাজীবের এই নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে মনোজ মালব্যের জায়গায় তিনি এ বার দায়িত্ব নেবেন।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার থাকাকালীন একাধিক বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল রাজীবের। ২০১৩ সালে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলায় তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল ‘সিট’ গঠন করে রাজ্য। ‘সিট’-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখার দায়িত্বে ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে সারদাকাণ্ডে তৃণমূলের তৎকালীন সাংসদ এবং বর্তমান ওই দলের মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে সেই সারদা মামলাতেই রাজীবকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে সারদা মামলার তথ্য লোপাটের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় কলকাতা হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিনও নিতে হয়েছিল রাজীবকে। সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁর বাসভবনে যায় সিবিআই। এর প্রতিবাদে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্না দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। সিবিআই দাবি করে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সারদা-সহ সমস্ত অর্থ লগ্নি সংস্থার টাকা ও সুবিধা কারা ভোগ করেছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজীব কুমার কোনও সহযোগিতা করেননি।
একটা সময়ে এই সারদা তদন্তে শিলংয়ে রাজীব এবং কুণালকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সেই রাজীবকে ডিজি পদে বসানোর খবরে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েও খোঁচা দিয়েছেন কুণাল। রাজীবকে ‘দক্ষ আইপিএস’ অফিসার বলার পর কুণালের ‘পরামর্শ’, ‘‘আমার মতো নির্দোষকে কারও নির্দেশে বলি দিতে যাবেন না। তাতে আগামী দিনগুলো ভাল যায় না।’’
পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৯৮৯ ব্যাচের আইপিএস অফিসার রাজীব পুলিশের বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। এক সময় সিআইডির অতিরিক্ত ডিজি-ও ছিলেন তিনি।