Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রী মমতার দু’দিনের বিমান বিভ্রাট নিয়েই এ বার তদন্তের নির্দেশ ডিজিসিএ-র

বারাণসী থেকে কলকাতা ফেরার সময় বিমান গোলযোগ নিয়ে মমতা সোমবার জানান, আর ১০ সেকেন্ড ওই রকম ঝাঁকুনি চললে বড় অঘটন ঘটতে পারত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২২ ০৬:১০
Share:

গ্রাফিক্স শৌভিক দেবনাথ।

শুধু কাশী থেকে ফেরার সময়ে নয়, গত ২ মার্চ কলকাতা থেকে বারাণসী যাওয়ার সময়েও একটি হেলিকপ্টার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত বিমান (ভাড়া নেওয়া)-এর খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে ভিআইপি-র নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে কি না, তা জানতে চেয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট।

Advertisement

গত ৪ মার্চ বারাণসী থেকে ফেরার সময় মুখ্যমন্ত্রীর ওই বিমান ঝঞ্ঝাপূর্ণ আবহাওয়ায় পড়ে। বিমানটি এক ধাক্কায় সাত হাজার থেকে নেমে আসে দু’হাজার ফুট নীচে। যার প্রতিঘাতে বিমানে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর কোমরে ব্যথা লাগে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য রাজ্য সরকার গত শনিবার কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভিকে চিঠি লিখেছে। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) ৪ মার্চের পাশাপাশি ২ মার্চে হেলিকপ্টার সংক্রান্ত ঘটনারও তদন্তে নেমেছে।

বারাণসী থেকে কলকাতা ফেরার সময় বিমান গোলযোগ নিয়ে মমতা সোমবার জানান, আর ১০ সেকেন্ড ওই রকম ঝাঁকুনি চললে বড় অঘটন ঘটতে পারত। তাঁর বিশ্বাস, সামনে অন্য কিছু চলে আসায় এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে কেন্দ্রের তদন্তে তাঁর যে খুব বেশি আস্থা নেই, সেটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, তাঁর কোমরে এখনও ব্যথা আছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দুর্যোগের পূর্বাভাস না-থাকলেও কিছু কিছু মেঘের মধ্যে ঢুকে পড়লে বিমান এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে আসে। সেটাকে বলে ‘ক্লিয়ার এয়ার টার্বুলেন্স’। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সে-দিন ওই ঝঞ্ঝামেঘ দেখে পাইলট জানতে চেয়েছিলেন, তিনি ওই মেঘ এড়াতে ডান বা বাঁ দিকে সরে যেতে পারবেন কি না। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) তাঁকে জানায়, তিনি চাইলে নীচে নেমে আসতে পারেন। পাইলট তখন জানতে চান, নীচে কোনও বিমান আছে কি না। এটিসি জানায়, তাঁর রাস্তা পুরো পরিষ্কার। তার পরে নেমে আসে বিমান।

মমতার বিমানের কাছে সে-দিন অন্য বিমানের চলে আসার ব্যাপারে এক কর্তা জানান, যতটুকু তথ্য এখনও পর্যন্ত হাতে এসেছে, তাতে ঘটনার সময় কলকাতা বিমানবন্দর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান ছিল প্রায় ৪৬ কিলোমিটার দূরে। আর তার প্রায় ৩৮ কিলোমিটার আগে কলকাতায় নামার মুখে ছিল উপকূল বাহিনীর একটি বিমান। সাধারণ ভাবে আকাশে দু’টি বিমানের মধ্যে প্রায় ১৯ কিলোমিটারের ব্যবধান রাখাই দস্তুর।

বারাণসী যাওয়ার দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, বিমানবন্দরের যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান দাঁড় করানো ছিল, মমতা এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গাড়িতে। সেই সময় একটি বেসরকারি সংস্থার হেলিকপ্টার কলকাতায় নেমে পার্কিং বে-র দিকে আসছিল। ভিআইপি-র কনভয়ের সামনে থাকা কর্তৃপক্ষের ‘ফলো-মি’ জিপ থেকে তা এটিসি-কে জানানোর পরে হেলিকপ্টারটিকে থামিয়ে দেওয়া হয়। ভিআইপি-সহ অন্যেরা বিমানে উঠে যাওয়ার পরে সেই হেলিকপ্টার এসে দাঁড়ায় বিমানের পাশের পার্কিং বে-তে।

মুখ্যমন্ত্রীর জন্য রাজ্য সরকার ফ্যালকন বিমানটি যে-সংস্থা থেকে ভাড়া নিয়েছে,সেই লিগেয়ার সংস্থার কর্তারা এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। একটি সূত্রের খবর, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ দিনই একটি রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সে-দিন ঠিক কী ঘটেছিল, পাইলট এবং এটিসি অফিসারদের কাছ থেকে তার রিপোর্ট নিয়ে দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত সংক্রান্ত রিপোর্টও রাজ্যের কাছে চাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement