তেলের সঙ্গে জল, হেনস্থা ইন্ডিগোর

কলকাতা থেকে যে বিমান সংস্থাগুলি নিয়মিত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে, তাদের মধ্যে এক মাত্র ইন্ডিগোই ওই বেসরকারি তেল সংস্থাটির কাছ থেকে জ্বালানি নিত। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওই তেল সংস্থার সঙ্গে ইন্ডিগোর সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

দিন দশেক আগের ঘটনা। বিমানের জ্বালানির সঙ্গে জল মিশে চরম হেনস্থায় পড়ে ইন্ডিগো। মাঝ আকাশ থেকে ফিরিয়েও আনতে হয় যাত্রী-সহ বিমানকে। কী করে জল মিশল, তা নিয়ে তদন্ত এখনও চলছে। তার পরে কলকাতায় নির্দিষ্ট ওই তেল সংস্থার কাছ জ্বালানি নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল ইন্ডিগো। কারণ, তেলে জলে যে মিশ খায় না, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ইন্ডিগো। তবে বিমান সংস্থা সূত্রের খবর, শনিবার থেকে আবার ওই তেল সংস্থাটির কাছ থেকে জ্বালানি নিতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তদন্ত যেমন চলছিল তেমন চলবে।

Advertisement

মাত্র দিন দশেক আগে জ্বালানির সঙ্গে জল মিশে যাওয়ার ফলে দেশ জুড়ে তাদের বেশ কিছু বিমান বসিয়ে দিতে বাধ্য হয় ইন্ডিগো। জ্বালানির সঙ্গে ওই জল মিশেছিল কলকাতাতেই! প্রতিটি বিমানের জ্বালানি পুরো ফেলে দিয়ে, জ্বালানি ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার পরেই সেগুলি আবার যাত্রী নিয়ে উড়তে শুরু করেছে। তার আগে জল মেশানো জ্বালানি নিয়ে কলকাতা থেকে উড়েও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান আবার কলকাতায় ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয় তারা। এ ঘটনা যে নিরাপত্তার পক্ষে বড়সড় ঝুঁকির, তা মানছেন ইন্ডিগোর কর্তারা।

আরও পড়ুন: সাইবার জালিয়াতি মামলায় জার্মান কৌঁসুলি

Advertisement

কলকাতা থেকে যে বিমান সংস্থাগুলি নিয়মিত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে, তাদের মধ্যে এক মাত্র ইন্ডিগোই ওই বেসরকারি তেল সংস্থাটির কাছ থেকে জ্বালানি নিত। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওই তেল সংস্থার সঙ্গে ইন্ডিগোর সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। সেই কারণেই যৌথ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই তেল সংস্থার মুখপাত্রের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। এসএমএস এবং হোয়াটসঅ্যাপ বার্তারও উত্তর দেননি তিনি।

ঘটনার সূত্রপাত ৫ জুলাই, বুধবার। কলকাতা থেকে পেট ভরে জ্বালানি নিয়ে সে দিন ইন্ডিগোর বিমান যখন বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য তৈরি ছিল, তখন ককপিটে জ্বালানি সংক্রান্ত বিপদ সঙ্কেত পান পাইলট। সেই বিমান থেকে যাত্রীদের নামিয়ে তখন অন্য বিমানে তোলা হয়। কিন্তু সেটিতেও একই সমস্যা দেখা দেয়। যাত্রীদের তখন তৃতীয় একটি বিমানে বেঙ্গালুরু পাঠানো হয়।

জ্বালানির সঙ্গে যে জল মিশে গিয়েছে, তা বুঝে উঠতেই বুধবার রাত হয়ে যায়। তত ক্ষণে অন্য শহর থেকে ইন্ডিগোর বেশ কয়েকটি বিমান কলকাতায় এসে জ্বালানি ভরে নিয়ে যায়। বিমান ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এক বার ফুয়েল ট্যাঙ্কে জল ঢুকে গেলে পুরো ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করে তবেই জ্বালানি ভরতে হয়। সব ক’টি বিমানেই এ কাজ করতে হয়। বুধবার রাতে কলকাতায় বসে যাওয়া দু’টি বিমানের একটি বৃহস্পতিবার সকালে ট্যা‌ঙ্ক পরিষ্কার করে দিল্লি যায়। দ্বিতীয় বিমানটি যাত্রী নিয়ে মুম্বই রওনা হয় বৃহস্পতিবার রাতে। কিন্তু, আধঘণ্টা পরেই ত্রুটির সঙ্কেত পেয়ে ফেরে।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই ওই তেল সংস্থার জ্বালানি নেওয়া বন্ধ করে দেয় ইন্ডিগো। সে দিন তেলের সঙ্গে জল মিশে যাওয়ার ওই ঘটনাটি বজবজে সংস্থার তেল ডিপো-তে হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ওই ডিপো থেকেই কলকাতা বিমানবন্দরে জ্বালানি সরবরাহ করা হতো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement