ফাইল ছবি
রাজ্যপাল নন, রাজ্য সরকারের অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই নিয়ে বিধানসভায় একটি বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগতকে জানিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। আবার একাংশের মত, এর ফলে শিক্ষায় দলীয় শাসনের ‘দাপাদাপি’ বাড়বে।মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুডি় বলেন, ‘‘রাজ্যপালের জন্যই এই ঘটনা। তাঁর কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে ভুল ধরিয়ে দেওয়া। কিন্তু তিনি তা না করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একের পর এক বিল আটকে রাখেছেন। সরকারের সব কাজকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। আমি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই।’’
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, ‘‘এর তিনটি দিক রয়েছে। প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্মে সাহায্য করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, রাজ্যপাল থাকার ফলে ইউজিসি ছাড়াও তাঁর মাধ্যমে কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকত। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সাহায্য পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা হত। এ ক্ষেত্রে সেই সম্পর্কটি কিছুটা হলেও দুর্বল হবে। তৃতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, ফলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাথায় থাকলে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে।’’ তবে তাঁর মতে, ‘‘যেহেতু এটি মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত তাই মেনে না নিয়ে উপায় নেই।’’
শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তিনি এক জন রাজনীতিক। এই সিদ্ধান্তের ফলে শিক্ষায় রাজনৈতিক প্রভাব বাড়বে।’’
প্রসঙ্গত, কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান নিজেই মুখ্যমন্ত্রীকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অধ্যক্ষ হতে প্রস্তাব দেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেন, ‘‘আচার্য পদে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নয় বরং মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আচার্য হয়ে যান। আর্ডিনান্স জারি করে আমাকে পাঠালে আমি সই করে দেব।’’
অন্য দিকে তামিলনাডুতেও ডিএমকে সরকারের সঙ্গেও রাজ্যপালের নিয়মিত সঙ্ঘাত কার্যত পশ্চিমবঙ্গেও মতো। তাঁরাও মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব পাশ করায়, ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আচার্য হবে তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার। সেই বিল পাশ হয় বিধানসভাতেও।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।