ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গে এনআইএ অভিযান নিয়ে পুরোদস্তুর রাজনীতিতে নেমে পড়ল বিজেপি। জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরব হল তারা। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ নিয়ে সরকারি তথ্যকে ব্যবহার করেও রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলছেন বিজেপি নেতারা। তৃণমূল পাল্টা বলেছে, সীমান্ত পাহারা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ। অনুপ্রবেশের দায় তাদের।
রবিবার সংসদ ভবনে গাঁধীমূর্তির সামনে পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের কর্মী খুনের প্রতিবাদে ধর্নায় যোগ দেন রাজ্য থেকে বিজেপির ১০ সাংসদ। সেই ধর্নায় সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ব্যর্থতার বিষয়টিও স্লোগানে আনা হয়। এর মধ্যেই সংসদে এক সদস্যের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ দিন যে সংখ্যা প্রকাশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে— গত পাঁচ বছর ধরে সীমান্ত পেরিয়ে ধরা পড়া অনুপ্রবেশকারীদের সিংহভাগই পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তে। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি উল্লেখ করে টুইটে লিখেছেন, ‘২০১৪-য় খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেও শিক্ষা নেয়নি তৃণমূল সরকার। অনুপ্রবেশকারীদের ৬০ শতাংশই পশ্চিমবঙ্গের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবে অনুপ্রবেশ রুখতে তৎপর হবেন?’
বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কথা বিবেচনা করে এখনই জবাব দেওয়ার পথে হাঁটছে না রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বহু বার এর জবাব দিয়েছেন। সীমান্ত পাহারা দেওয়ার দায়িত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী, আর রাজ্যকে তার ব্যর্থতা নিয়ে দোষারোপ করার রাজনীতিটা মানুষ বোঝেন।’’ খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেও জেএমবি-র বহু জঙ্গিকে রাজ্য পুলিশের বাহিনী বা কলকাতা পুলিশের এসটিএফ-ই যে আটক করেছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। সুতরাং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রাজ্য তৎপর নয়, এমন কথা রাজ্যবাসী বিশ্বাস করবেন না বলেই দাবি তৃণমূলের। বরং অনুপ্রবেশ ও জঙ্গি নিয়ে বিজেপির এই প্রচার ভোটের আগে চক্রান্তের কৌশল হতে পারে বলেও মনে করছে রাজ্যের শাসক দল। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘দেশ সবার উপরে। কিন্তু কতটা কী ঘটেছে, কতটা রাজনৈতিক কারণে প্রচার করা হচ্ছে, কিছুই তো জানা নেই। তদন্ত হোক, বিচার হোক। আগেই রাজনৈতিক প্রচার কেন?’’
এর মধ্যেই অনুপ্রবেশ-সহ একগুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিন দিন আলোচনার পরে শনিবার দেশে ফিরেছেন বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্থানা। কাল বিজিবি-র ডিজি মেজর জেনারেল মোহম্মদ সাফিনুল ইসলামকে পাশে নিয়ে সীমান্তে গুলিতে ‘নিরীহ মানুষের’ মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আস্থানা। বস্তুত গোটা বৈঠকেই সব চেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাগুলি।