বাংলাদেশের মাটিতেই তৈরি হচ্ছে জাল ভারতীয় ভোটারকার্ড!
সাত বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করে এমনই তথ্য পেল বনগাঁ থানার পুলিশ। এ দেশের মাটিতে ঢুকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা আকছার ভুয়ো ভোটারকার্ড বা অন্য নথি বানিয়ে ফেলে— এ কথা দীর্ঘ দিন ধরেই জানা। কিন্তু বাংলাদেশে বসেই এ দেশের ভুয়ো নাগরিক পরিচয়পত্র মিলছে, তা জানা ছিল না পুলিশেরও।
কী ভাবে এই তথ্য সামনে এল?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার বনগাঁ শহরের আরএফ মাঠ এলাকা থেকে ৭ জন অনুপ্রবেশকারীকে ধরে পুলিশ। তাদের মধ্যে এক মহিলাও আছে। জানা যায়, এ দিনই ভোরে দালাল ধরে এ দেশে এসেছিল তারা। কাজের খোঁজে যাওয়ার কথা ছিল মুম্বইয়ে।
অনুপ্রবেশকারী আকছার ধরা পড়ে বনগাঁ সীমান্তে। কিন্তু এ দিন ওই সাতজনের মধ্যে পানু শিকদার, মহম্মদ মীর আমির ও জহিদুলের কাছ থেকে মেলা নথিপত্র দেখে চোখ চড়কগাছ তদন্তকারী অফিসারদের। তাঁরা দেখেন, ওই তিন জনের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হিসাবে যে ভুয়ো ভোটারকার্ড আছে, সেখানে তিন জনের ছবি আসল হলেও নাম ও পরিচয় বদলে গিয়েছে। যেমন, আমিরের ঠিকানা লেখা হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানা এলাকার। পানুর ঠিকানা আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের। জহিদুলকে দেখানো হয়েছে কোচবিহারের বক্সিরহাটের বাসিন্দা হিসাবে।
ওই তিন জন জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, সকলে ফরিদপুরের বাসিন্দা। কিন্তু বেনাপোলের জনৈক রাজ্জাক তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে সে দেশেই এই ভারতীয় ভোটার পরিচয়পত্র বানিয়ে দিয়েছিল। এই তথ্যই পুলিশের কাছে নতুন। আরও জানা যায়, সেই রাজ্জাকই আরও ৫ হাজার টাকা করে নিয়ে সকলকে এ দেশে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিল।
উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, ওই ভুয়ো পরিচয়পত্র অনুপ্রবেশকারীরা ভিনদেশেই বসে পেয়েছিল বলে জানিয়েছে। বিএসএফ ধরলে যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্যই আগেভাগে এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই চক্রে এ দেশের কেউ জড়িত কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আমির, জহিদুল ও পানুকে এ দিন বনগাঁ মহকুমা আদালতের বিচারক ৬ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এক মহিলা-সহ বাকিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।