ফাইল চিত্র।
কোথাও কোথাও মুরগির এক-একটি ডিম সাড়ে ছ’টাকায় মিলছে, কোথাও বা তা বিকোচ্ছে সাত-সাড়ে সাত টাকায়। মুরগির মাংসের দাম আগেই বেড়ে গিয়েছিল। এ বার মূল্যবৃদ্ধির আঁচ লেগেছে ডিমের বাজারেও।
নিম্নবিত্তের নাগালের মধ্যে আমিষ প্রোটিনের উৎস হিসেবে মুরগির মাংস ও ডিমই সহজলভ্য। কিন্তু তার দাম এ ভাবে বাড়তে থাকায় অনেকেই অসুবিধায় পড়েছেন। দোকানদারদের বক্তব্য, পাইকারি বাজারে ডিম ও মুরগির দাম বেড়েছে। তার প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারে। সরকারি ব্র্যান্ড হরিণঘাটার দোকানগুলিতেও ডিমের আকাল। সেখানে ডিম-মাংসের দাম কম হলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই।
গত বছর দুয়েকের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় হরিণঘাটার দোকান খুলেছে। কিন্তু সরকারি সংস্থা থেকে ডিম ও মাংসের সরবরাহ নিয়ে ক্ষুব্ধ দোকানদারেরা। তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, বরাত অনুযায়ী ডিম-মাংস মিলছে না। কখনও বা পণ্য পৌঁছচ্ছে বরাতের বহু পরে। ফলে গ্রাহকদের অসন্তোষ বাড়ছে। আবার কম দামের জিনিসের আকাল থাকায় বাজারে যথেচ্ছ দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ।
হরিণঘাটা ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌরীশঙ্কর কোনার জানান, তাঁদের ফার্মে প্রতিদিন ৬৫ থেকে ৭০ হাজার ডিম উৎপন্ন হয়। তার মধ্যে ২৭ হাজার ডিম যায় ‘মা ক্যান্টিন’-এ। বাকি ডিম কলকাতা ও শহরতলির ৩২০টি কাউন্টারে পাঠানো হয়। মা ক্যান্টিনের জন্য কাউন্টারগুলিতে ডিমের সরবরাহ কমানো হয়েছে। তাঁর আশা, জুলাইয়ে সুরাহা হবে। কারণ, ওই মাসের প্রথম সপ্তাহে আর একটি মুরগির ফ্লক প্রোডাকশন শুরু হবে।
মাংসের সরবরাহ কমল কেন, তার সদুত্তর মেলেনি। হরিণঘাটা ফার্মের একটি সূত্রের অভিযোগ, ফার্ম থেকে কাউন্টারে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার তরফে নানা ধরনের গাফিলতি রয়েছে। সেই সংস্থা নির্বাচন নিয়েও রয়েছে নানা জটিলতা। তার ফলেই এই সমস্যা।
মুরগির মাংস ও ডিমের মূল্যবৃদ্ধির জন্য উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন পশ্চিমবঙ্গ পোলট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি। তিনি জানান, করোনার জন্য গত বছর সয়াবিনের চাষ মার খেয়েছে। ফলে সয়াবিনের খোসা (মুরগির খাবারের অন্যতম উপাদান)-সহ মুরগির খাবারের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে উৎপাদনের খরচ বেড়েছে ৬০%। তার ফলেই ডিম ও মাংসের দাম বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে চার মাস আগে বিদেশ থেকে ১০ লক্ষ টন সয়াবিনের খোসা আমদানির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি।