Abhishek Manu Singhvi

খাঁচায় বন্দি তোতাকে ছেড়ে দিলে সে উড়ে গিয়ে আরও ধ্বংস করে, সিবিআইকে কটাক্ষ সিঙ্ঘভির

আমেরিকার বিখ্যাত বক্সার মহম্মদ আলির একটি উক্তি তুলে সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন, ‘‘দাবিটি যেন ভাসমান। প্রজাপতির মতো উড়ে, মৌমাছির মতো হুল ফোটায়।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২১ ২০:০৮
Share:

অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি নিজস্ব চিত্র

সিবিআই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ফিরে এল কলকাতা হাই কোর্টের নারদ মামলায়। মঙ্গলবার হাই কোর্টের শুনানিতে সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। সিবিআইকে তিনি ‘খাঁচায় বন্দি তোতাপাখি’ বলে কটাক্ষ করেন। সিঙ্ঘভির ওই মন্তব্য আট বছর আগে সিবিআইকে নিয়ে শীর্ষ আদালতের এক পর্যবেক্ষণকে মনে করিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

সোমবারের পর মঙ্গলবারও কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানি হয়। মামলা অন্যত্র সরানো হবে কি না তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চলে সওয়াল পর্ব। এই মামলায় প্রভাবশালীর তত্ত্বও খাড়া করেছে সিবিআই। ১৭ মে, যে দিন রাজ্যের ৪ নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে সিবিআই সে দিনের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ধর্না এবং বিক্ষোভের ঘটনায় বিচারব্যবস্থা প্রভাবিত হয়েছে বলে তারা দাবি করে। মঙ্গলবার সেই দাবির বিরোধিতা করে পাল্টা সওয়াল করেন সিঙ্ঘভি। আদালতে তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার করা হল না অথচ চার্জশিট জমা দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হল। আর এখন প্রভাবশালী তত্ত্ব সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। আবার তারা যে প্রভাবের কথা বলছে, তার সপক্ষে কোনও যুক্তিও দিতে পারছে না। নিজাম প্যালেসের ভিতরে উন্মত্ত জনতা প্রবেশ করেনি। তাঁরা বাইরে বিক্ষোভ দেখান। আমরা নিজাম প্যালেসের ওই দিনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।’’

এর পরেই সিবিআইয়ের সমালোচনা করেন তিনি। কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘খাঁচায় বন্দি তোতাপাখি খারাপ। তাকে ছেড়ে দিলে সে অন্যের ঘরে ঢুকে উড়ে গিয়ে আরও ধ্বংস করবে।’’ সিঙ্ঘভির ওই মন্তব্য ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘সিবিআই খাঁচায় বন্দি তোতা। সে তার রাজনৈতিক প্রভুদের নির্দেশ মতো কথা বলে।’

Advertisement

সিঙ্ঘভি ওই মন্তব্যে পরোক্ষে কেন্দ্রীয় সরকারকেই নিশানা করেছেন। মঙ্গলবার নিজের সওয়ালে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালে এফআইআর দায়ের হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেন ৫ মে। ৭ মে অনুমোদন দেন রাজ্যপাল। ১০ মে হয় মন্ত্রিসভার শপথ। আর ১৭ মে গ্রেফতার হন অভিযুক্তরা। অর্থাৎ দীর্ঘ সময় মামলাটি পড়ে থাকলেও তার অগ্রগতি হয়নি। অথচ তৃণমূল নির্বাচনে জয়লাভের পরেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সিবিআই। এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।’’

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই মামলা ব্যাঙ্কশাল আদালত থেকে অন্যত্র সরানোর আর্জি জানিয়েছেন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি তুষার মেহতা। মামলা অন্যত্র সরানোর আর্জিতে সিঙ্ঘভির সায় রয়েছে কি না তা জানতে চান বিচারপতিরা। সিঙ্ঘভি তাতে আপত্তি জানিয়ে আমেরিকার বিখ্যাত বক্সার মহম্মদ আলির একটি উক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘কখনও বলছে ৪০৭ ধারা, কখনও বলছে ২২৬ ধারা, আবার কখনও বলছে ৪৮২ ধারা। দাবিটি যেন ভাসমান। প্রজাপতির মতো ওড়ে, মৌমাছির মতো হুল ফোটায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement