আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের পরিবর্তে এ বার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করবেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর মামলায় আইনজীবী বদল করল নির্যাতিতার পরিবারও। আরজি করে ধর্ষিতা এবং খুন হওয়া চিকিৎসকের পরিবারের হয়ে এ বার মামলা লড়বেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। আগে নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করতেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তবে গত শুনানি থেকেই আইনজীবী গ্রোভারকে ওই দায়িত্ব দিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবার। এ নিয়ে আইনজীবী বিকাশরঞ্জনের বক্তব্য, ‘‘ওঁদের (নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের) বোধ হয় কেউ মোটিভেট করছেন। তাঁদের হয়তো বোঝানো হচ্ছে যে, সুপ্রিম কোর্টে লড়াইয়ের জন্য দিল্লির কোনও আইনজীবী হলে ভাল হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, ওই তথ্য জানার পরে সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে সরে এসেছেন। আইনজীবীর কথায়, ‘‘আমার কোনও ‘স্টেক’ নেই এখানে।’’
আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রয়েছে আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে আইনজীবী বদলের খবর মিলেছে। যদিও গত ১৭ সেপ্টেম্বরের শুনানিতেও হাজির ছিলেন আইনজীবী গ্রোভার। তবে সওয়ালের সুযোগ পাননি বলে খবর। একটি সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, মামলাটি লড়ার জন্য তিনি কোনও পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না। মৃতা চিকিৎসকের পারিবারিক ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, তাঁরা চাইছেন ‘ওজনদার’ কোনও আইনজীবী তাঁদের মেয়ের সুবিচারের জন্য লড়ুন। তাঁরা উদাহরণ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহের সওয়ালের। উল্লেখ্য, এর আগে জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আইনজীবী গীতা লুথরার বদলে আইনজীবী ইন্দিরাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আইনজীবী গ্রোভার একাধিক মানবাধিকার মামলায় সুনাম অর্জন করেছেন। মহিলা এবং শিশুদের উপর নির্যাতনের মামলাতেও বিশেষ পরিচিতি রয়েছে তাঁর। আবার দেশের ধর্ষণ আইন লিঙ্গনিরপেক্ষ নয় দাবি করে লড়াই জারি রেখেছেন ওই আইনজীবী। ২০১২ সালে একটি আইনের প্রেক্ষিতে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, কেন ধর্ষণ আইন লিঙ্গনিরপেক্ষ হওয়া উচিত। বাস্তবে পুরুষও যে ধর্ষিত হন এমন বেশ কিছু উদাহরণ দেন তিনি। এ ছাড়াও রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য আইনজীবী গ্রোভার। ১৯৮৭ সালে হাসিমপুরা পুলিশ হত্যা মামলা, ২০০৪ সালের ইশরত জাহান মামলা, ২০০৮ সালে কান্দামালে খ্রিস্টান বিরোধী দাঙ্গা মামলায় লড়েছেন। শিশুদের যৌন হেনস্থা থেকে সুরক্ষা এবং নির্যাতন প্রতিরোধ বিলের সংশোধনীর খসড়া তৈরিতে আইনজীবী গ্রোভারের অবদান রয়েছে।