শুধু বিজেপি নয়, রবিবার অভিষেকের আক্রমণের তির ছিল কংগ্রেস-সিপিএমের দিকেও।
তাঁকে ঘিরে চলতে থাকা ‘ভাইপো’ ইস্যুতে এ বার নিজেই মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সাতগাছিয়ার জনসভায় রীতিমতো আক্রমণাত্মক মেজাজেই বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। বললেন, ‘‘ভাইপো বলে বারবার আমাকে ডাকা হয়েছে। যে ভারতীয় জনতা পার্টি আমাকে বারবার ভাইপো বলে ডাকছে, তাদের সাহস থাকলে আমার নাম ধরে ডাকুক। বিজেপির ছোট, ব়ড়, মাঝারি নেতা আমাকে বারবার ভাইপো বলে ডেকেছে।’’
সম্প্রতি ‘ভাইপো’ ইস্যুতে সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। গত ২১ নভেম্বর একটি সমাবেশে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং এ রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয় সরাসরি নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ভাইপো’ বলে নিশানা করেছিলেন। এর পরেই তার জবাব দেয় তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পরের দিনই সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “ভাইপো না বলে, হিম্মত থাকলে নাম করে রাজনৈতিক সমালোচনা করুন।” সেই সুরেই রবিবার আরও সুর চড়ালেন অভিষেক নিজে।
বিজেপির ‘ভাইপো’ ইস্যুতে অভিষেকের বক্তব্য নিয়ে দু’ধরনের ব্যাখ্যা চলছে রাজনৈতিক মহলে। অনেকে বলছেন, বিজেপিকে সম্মুখ সমরে আহ্বান করে নিজের কড়া এবং দৃঢ় অবস্থান স্পষ্ট করলেন অভিষেক। আবার অনেকের মতে, এই বিষয়টি তিনি উপেক্ষা করতে পারতেন। তা না করে জিইয়ে রাখার রাস্তা করে দিলেন।
আরও পড়ুন: ঘর গোছাতে ডিসেম্বর থেকে ময়দানে নামছেন মমতা, একগুচ্ছ কর্মসূচি
শুধু বিজেপি নয়, রবিবার অভিষেকের আক্রমণের তির ছিল কংগ্রেস-সিপিএমের দিকেও। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএম, সবার আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু ভাইপো। কিন্তু কেউ নাম নিতে পারে না। বুকের পাটা থাকলে নাম নিয়ে দেখাক। যিনি আমার নাম নিয়ে মিথ্যে কথা বলেছেন, তাঁকে আমি আদালতের রাস্তা দেখিয়েছি। তাই বলছি, যদি সাহস থাকে, তাহলে আমার নাম নিয়ে বলুন।’’
আরও পড়ুন: নয়া কৃষি আইন শিকলমুক্তির, রাজধানীতে বিক্ষোভের মধ্যেই বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
ওই সভায় নাম না করে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকেও আক্রমণ করেন অভিষেক। গত ৩১ অক্টোবর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে এক বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানে কড়া ভাষায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি প্যারাসুটে নামিনি এবং লিফটেও উঠিনি।’’ রবিবার যেন তারই জবাব দিলেন অভিষেক। তিনি নিজেও প্যারাসুটে চেপে নীচে নামেননি এবং হেলিকপ্টারে চড়ে উপরে ওঠেননি বলে উল্লেখ করেন অভিষেক। তৃণমূলের কেউই প্যারাসুটে নামেননি বা লিফটে ওঠেননি। তাহলে তাঁদের বড় বড় পদপ্রাপ্তি হতে পারত। অভিষেক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল এক দিনে তৈরি হয়নি। মমতা নামক সেই সূর্যের সঙ্গে যে লড়তে যাবে সে ঝলসে যাবে। রবিবার নাম করে বিজেপির নেতাদের আক্রমণ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ গুন্ডা।’ অভিষেকের এই কথার পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতিও। তিনি বলেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ গুন্ডা তো তাতে কী যায় আসে। তোমরা গুন্ডামি করেছো এত দিন। আমার গুন্ডামিটা দেখো এখন। সময় আমার এসেছে। দরকার হলে গুন্ডামি করব। পারলে ঠেকাও। দম কতটা আছে ডিসেম্বরে দেখিয়ে দেব। আর এফআইআর হবে কি না সময়ে সব বলবে।’’