আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। ছবি সংগৃহীত।
শুধু বিজেপি নয়, ধর্মের ভিত্তিতে যাঁরাই বাংলায় রাজনীতি করবেন, তাঁদের জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিল বঙ্গীয় ইমাম সংগঠন। বঙ্গবাসীকে হিন্দু বা মুসলিম হিসেবে দেখার রাজনীতির বিরোধিতা করে বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন সংগঠনের সভাপতি মহম্মদ ইয়াহিয়া।
সম্প্রতি বঙ্গের ভোট-রাজনীতিতে ‘মুসলিমদের দল’ তকমাধারী অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম বা এমআইএম)-এর উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে সরব হয়েছে মুসলিম সমাজে প্রভাবশালী বিভিন্ন সংগঠন। এ রাজ্যের মুসলিম সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠী বসিরহাট দরবার শরিফের পিরজাদা খোবায়েব আমিন, পশ্চিমবঙ্গ আহলে হাদিস রাজ্য কমিটির সদস্য মৌলানা উমায়ের আহমেদ বুখারি প্রমুখকে পাশে নিয়ে ইমাম ইয়াহিয়া এ দিন বাঙালি সত্তাকে হিন্দু-মুসলিম রাজনীতির বাইরে রাখার আর্জি জানান। তাঁর কথা, ‘‘বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে এখন রবীন্দ্র-নজরুলের নামে লড়তে হবে। বাংলার জল, বাংলার মাটিকে পুণ্য করার, পূর্ণ করার সঙ্কল্পে গোষ্ঠী-রাজনীতির ঠাঁই নেই।’’
নাখোদা মসসজিদের ইমাম শাফিক কাশমিও ফোনে জানান, রাজনীতির মধ্যে ধর্মকে ঢোকানো ঠিক নয়। ধর্ম থাক ধর্মের জায়গায়। রাজনীতি হোক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, খাদ্যের দাবিতেই। ‘‘বাংলার মানুষ বরাবরই সাম্প্রদায়িতকতা-বিরোধী। কোনও ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তি উৎসাহ পায়, এমন কাজ তাঁরা ভোটে করবেন না বলেই মনে করি,’’ বলেন কাশমি।
এমআইএম এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে পারে, এমন একটা ধারণা রাজনৈতিক মহলে চাউর হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, তাতে ভোট কাটাকুটির অঙ্কে সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। এই প্রেক্ষিতে এমআইএম-এর বিরুদ্ধে ইমামদের সংগঠনের অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমআইএম-এর এক কর্ণধার সম্প্রতি ফুরফুরা শরিফের এক পিরজাদার সঙ্গে দেখা করেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বসিরহাট দরবার শরিফের পিরজাদা খোবায়েব আমিন এ দিন বলেন, ‘‘ভোটের আগেই হুটহাট মুসলিমদের দল বলে অনেকে উঠে আসে। এটা রাজনীতি। এর সঙ্গে বাংলার মুসলিমদের সম্পর্ক নেই।’’
একই সঙ্গে ইসলামের মতাদর্শে ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগত আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতি বৈধ নয় বলে বিবৃতি দিয়েছে ইমাম সংগঠন। এনআরসি-বিরোধী মঞ্চের প্রাণজিৎ দে, সোমা ভদ্র প্রমুখও এ দিন তাদের পাশে ছিলেন।