প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি অস্ত্রের কথা বলতেই নাম উঠে আসে মুঙ্গেরের। এই জগতের সঙ্গে ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই বলে থাকেন, অস্ত্র তৈরি মুঙ্গেরের ‘কুটির শিল্প’। বোমা তৈরিতে কিছুটা নাম রয়েছে মালদহের কালিয়াচকেরও। এবারে কোচবিহারেরও নাম উঠতে শুরু করেছে ওই তালিকায়।
বোমা তৈরি হচ্ছে একাধিক গ্রামে। ওয়ান শটার বা পাইপগানও তৈরি হচ্ছে কোচবিহারে। রাজনৈতিক সংঘর্ষে বোমা-গুলির মুহুর্মুহু ব্যবহার উদ্বেগ বাড়াচ্ছিল পুলিশের। সম্প্রতি তদন্তে নেমে এমনই তথ্য হাতে উঠে এসেছে পুলিশের। ইতিমধ্যেই ভেটাগুড়ির খারিজা বালাডাঙার একটি বাড়ি থেকে বোমা তৈরির সরঞ্জাম-সহ একজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “সব জায়গায় তল্লাশি চলছে। একাধিক গ্রেফতার করা হয়েছে।”
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত দেড় বছর ধরে অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে কোচবিহারে। গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে লড়াইয়ে যথেচ্ছ বোমা-গুলির ব্যবহার হয়েছে। প্রতিদিন জেলার একাধিক এলাকায় বোমাবাজির ঘটনা ঘটছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, এক সময়ের দুষ্কৃতীদের হাতেই মূলত আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সেই অস্ত্রের বেশির ভাগটাও চোরাপথে মুঙ্গের থেকে কোচবিহার পৌঁছত। নাইনএমএম, সেভেনএমএম থেকে সিক্স রাউন্ডের কারবারই চলত বেশি। সেই সঙ্গেই পাইপগানও বিক্রি হত। প্রায় পনেরো বছর আগে দুষ্কৃতীদের একটি অংশ পাইপগান ও বোমা তৈরির পদ্ধতি রপ্ত করেছিল। তার আগেও দু-একজন দুষ্কৃতী বিচ্ছিন্নভাবে তা তৈরি করত। কিন্তু সে-সবের চাহিদা তেমন না থাকায় তা শিখেও বিশেষ সুবিধে করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। এবারে রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে ফের ওই কাজ শুরু হয়েছে।
পুলিশ জেনেছে, বোমা তৈরির কাঁচামাল খুব সহজেই কোচবিহারে মেলে। ৫০০ টাকা থেকে দুই-তিন হাজার টাকা পর্য়ন্ত বোমা বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়াতেই বাড়িতে বসেই বোমা তৈরির কাজ শুরু করেছে দুষ্কৃতীরা। আবার পাইপগান তৈরি জন্য প্রয়োজন হয় লোহার পাইপের। যা খুব সহজেই পাওয়া যায়। ওই পাইপগান একটি পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকাতেই বিক্রি হচ্ছে।