শিবপুর আইআইইএসটি ছবি: সংগৃহীত।
ডিসেম্বরে জামিয়া মিলিয়া, আলিগড়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-শিক্ষকদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে শিবপুর আইআইইএসটি-র ক্যাম্পাসে ছাত্রদের মিছিলের অনুমতি দেননি কর্তৃপক্ষ। এ বার ‘ধর্মনিরপেক্ষতা, বিজ্ঞান ও গণতন্ত্র’ নিয়ে আলোচনাসভাও করতে দেওয়া হল না আইআইইএসটিতে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আলোচনাসভা করার জন্য যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ দিনই আইআইইএসটি-র রেজিস্ট্রার তাঁদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্যাম্পাসে কোনও অনুষ্ঠান করতে হলে আগে থেকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। ব্যানার, পোস্টার, বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাসে লাগাতে হলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে। ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের সব কর্মসূচির জন্য অনুমতি নিতে হবে ‘ডিন, স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ারের’।
এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড মেকানিক্স বিভাগের সেমিনার হলে আইআইইএসটি-র কয়েক জন শিক্ষকের উদ্যোগে শুক্রবার ওই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র, অধ্যাপক বিমলকৃষ্ণ নন্দ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক শুভাশিস মুখোপাধ্যায়কে। ওই আলোচনাসভার বিষয়ে ক্যাম্পাসে একটি ব্যানার লাগানো হয়। ব্যানারটি অধিকর্তার নজরে পড়ে। তার পরেই কর্তৃপক্ষের তরফে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, আলোচনাসভা করা যাবে না। আগে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্ধ ক্যামেরা, স্পিকারের ঘরে ধনখড়ের চা-বিস্কুট
রেজিস্ট্রার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই আলোচনাসভার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই অনুষ্ঠান বাতিল করতে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ভাবে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা না-হয়, সেই জন্য এ দিনই ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের মতে, দেশের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই আইআইইএসটিতে বহু লেকচার, আলোচনাসভা হয়। অনেক অতিথি বক্তা আসেন। তার জন্য কখনওই অধিকর্তার অনুমতি নিতে হয় না। এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড মেকানিক্স বিভাগের সেমিনার হলে এ দিনের সভা করার কথা ছিল। তাই বিষয়টি জানানো হয়েছিল ওই বিভাগের প্রধানকে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, আসলে এই আলোচনাসভা আদৌ করতে দেওয়া হবে না বলেই কর্তৃপক্ষ এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন।
ক্যাম্পাসে মিছিলের অনুমতি না-মেলায় শিবপুর আইআইইএসটি-র পড়ুয়ারা এর আগে জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী-শিক্ষকদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসের বাইরে মিছিল করেছিলেন। তাতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষক, প্রাক্তনীরাও। বিলি করা হয় সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি বা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি-বিরোধী প্রচারপত্র। এ দিনের সভাটি অবশ্য ক্যাম্পাসের ভিতরে বা বাইরে কোথাও করা যায়নি।