প্রসূন ও অভিষেক। —ফাইল চিত্র।
সাংসদ হয়েও দলে ‘গুরুত্ব’ নেই তাঁর। সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলে নিজের এই ‘আক্ষেপে’র কথা জানিয়েছিলেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার দলীয় সাংসদের সেই ‘আক্ষেপ’ মেটাতে সোমবার সন্ধ্যায় যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বসলেন তাঁর সঙ্গে।
সোমবার সন্ধ্যায় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে অভিষেকের ক্যামাক ষ্ট্রিটের অফিসে যান প্রসূন। সেখানেই দীর্ঘ সময় কথা হয় তাঁদের। এর পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় প্রসূনকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে তৈরি হওয়া আশঙ্কার গুমোট পরিস্থিতি কেটে গিয়েছে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে প্রসূন বলেন, ‘‘আমি মোহনবাগানের প্লেয়ার। খিদিরপুরে খেলতে যাব কেন! কোথাও যাচ্ছি না।’’ বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, আগামী কাল মঙ্গলবার কুণালের সঙ্গেই পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় দলীয় এক সভায় যাবেন এই ফুটবলার-রাজনীতিক।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২৩ জুলাই হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদে আনা হয় উত্তর হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্য তৎকালীন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। সঙ্গে সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর করা হয় মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্প্রতি প্রসূন অভিযোগ করেন, ওই নেতাদের কাছে একাধিক বার জেলা কমিটি গঠনের কথা বলেও কাজ হয়নি। সম্প্রতি জেলা সভাপতি পদে থেকে লক্ষ্মীরতন শুক্লর পদত্যাগের পর, তড়িঘড়ি ভাস্কর ভট্টাচার্যকে জেলা সভাপতি করে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। প্রসূনের অভিযোগ, এলাকার সাংসদ হলেও তাঁকে নতুন সভাপতি মনোনয়নের বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
এর পরেই ‘ক্ষুব্ধ’ প্রসূন সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন। এমনিতেই হাওড়া জেলা সংগঠনে রাজীবের ‘বিদ্রোহে’ জেরবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাতে নতুন অস্বস্তি তৈরি হয় প্রসূনকে নিয়ে। শতাব্দী রায়ের ‘বিদ্রোহে’ রাশ টানার পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব উদ্যোগী হন প্রসূনের ‘ক্ষোভ’ প্রশমিত করতে। সাংসদ সৌগত রায় ফোনে কথা বলে প্রসূনকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বারণ করেন। দলীয় স্তরে নিজের ক্ষোভের কারণ জানাতে পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে যাবতীয় ‘সমস্যা’ মিটিয়ে ফেললেন প্রসূন।
এর আগে গত সপ্তাহেই বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায় ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করেন। তিনি দিল্লি যাওয়ার কথাও প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। সেখানে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার জল্পনা তৈরি হয়। এর পরেই কুণাল ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের অফিসে নিয়ে যান তাঁকে। দীর্ঘ বৈঠকের পর শতাব্দী জানিয়েছেন, ‘সমস্যা মিটে গিয়েছে’। তিনি যে কোথাও যাচ্ছেন না, সে কথাও বলেছিলেন শতাব্দী। প্রসূনের ক্ষোভও একই রকম ভাবে ‘প্রশমিত’ হল।