কখনও ‘বোম মারব’, কখনও ‘চড়াম চড়াম’— বার বার বেফাঁস মন্তব্য করে সংবাদের শিরোনামে এসেছেন। শাসক দলেও ক্রমেই গুরুত্ব বেড়েছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সাফাই দিয়েছেন, তাঁর দলের ‘দক্ষ সংগঠক’ ওই সব মন্তব্য করেছেন নেহাতই মুখ ফস্কে বা মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে! কিন্তু আসলে যে ওই সব বিতর্কিত মন্তব্যই ছিল তাঁর সচেতন পরিকল্পনাজাত রাজনৈতিক রণকৌশল, রবিবার সে কথা নিজেই ঘোষণা করলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
বোলপুরে দলের আইনজীবী সংগঠনের সম্মেলনে দুই মন্ত্রীকে পাশে নিয়ে এ দিন অনুব্রত বলেন, ‘‘আমরা কিছু রাজনৈতিক কথা ভুল করে বলে ফেলি। আমি জানি যে, ভুল বলছি। এটা বললে কাগজে ছাপা হবে, চ্যানেলে দেখানো হবে। তবু দলের স্বার্থে বলি। দলকে চাঙ্গা করার জন্য বলতে হয়। কর্মী-সমর্থকদের মনোবল জোগাতে বলতে হয়। তার জন্যই ভুল হলেও বলি।”
আরও পড়ুন: মুখে লঙ্কা গুঁড়ো ঘষে গয়না লুঠ
অনুব্রতর এই অকপট স্বীকারোক্তিতে অবশ্য ভুলতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, জেনে বুঝে ‘অপরাধ’ করে তাকে লঘু করার চেষ্টা করেছেন অনুব্রত। কিন্তু তাঁর মতো নেতারা ভুলে যাচ্ছেন, তাঁদের ওই সব অসংবেদনশীল ‘ভুল’ মন্তব্যের কী প্রতিক্রিয়া হয় নিচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। বীরভূমের এক বাম নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে পাড়ুইয়ে অনুব্রতর বিরোধীদের হুমকি দেওয়ার পরেই খুন হন নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষ।
অনুব্রতর বক্তব্যকে চাপের মুখে ‘সাফাই’ গাওয়ার চেষ্টা বলে দাবি করছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের দিদির কথাতেই আর সেই ঝাঁজ নেই। বেগতিক বুঝে ভাইয়েরাও সাধু সাজার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এত হুমকির পর এখন অনুব্রতদের এই সব কথা কে আর বিশ্বাস করবেন?’’ প্রসঙ্গত, দিলীপবাবুও অবশ্য সাম্প্রতিক কালে বহু বার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন।