‘‘বাংলায় বিজেপির বিজয় রথ থেমেছ। কৃষক নেতা মমতার সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, বিজেপিকে ঠেকাতে মমতাই একমাত্র বিকল্প। বিজেপিকে উৎখাত করার এই লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২৩ সালে ত্রিপুরা থেকে উৎখাত করার লড়াই, ২০২৪-এ দেশজুড়ে উৎখাত করার লড়াই। আর এই লড়াইয়ে একমাত্র বিকল্প সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলের নেত্রী মমতা।’’ বলল তৃণমূল।
ত্রিপুরায় মানুষের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা মানুষ মেনে নেবে না: তৃণমূল
‘‘আই প্যাক কর্মীদের নতুন করে করোনা পরীক্ষা স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার চূড়ান্ত নিদর্শন। ইতিহাস জানে মুসোলিনিরাও একই কারবার করতেন। এই ট্রেন্ডটাও সেরকরমই’’ বলল তৃণমূল।
তৃণমূলের প্রশ্ন, ‘‘আরটিপিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকা সত্ত্বেও কেন আইপ্যাক কর্মীদের নতুন করে কোভিড পরীক্ষা করানো হল?’’ তারা জানতে চেয়েছে, যে হোটেল আই প্যাকের কর্মীরা রয়েছেন, সেই হোটেলের বাকি আবাসিকদেরও কি একইভাবে কোভিড পরীক্ষা করানো হয়েছে?
আই প্যাকের ২৩ জন সদস্যকেই ডেকে পাঠিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। তাদের ১ আগস্ট ডেকে পাঠানো হয়েছে।
তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের প্রশ্ন, ‘আই প্যাক ত্রিপুরায় এসেছিল সমীক্ষা করতে, গণতান্ত্রিক দেশে সমীক্ষা করার ক্ষেত্রে কোনও বিধি নিষেধ থাকতে পারে না। আমরা যেমন আরটিপিসিআর রিপোর্ট দেখিয়ে এখানে ঢুকেছি। ওঁরাও তাই করেছেন। তা হলে কোন যুক্তিতে ওঁদের আটক করা হল।’’
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এখানে এসেছি। তার কারণ গণতন্ত্রে বিরোধীদের কথা গুরুত্বপূর্ণ। ত্রিপুরায় এই বিষয়টি ব্যাহত হচ্ছে : ঋতব্রত
মলয় বললেন, ‘‘মমতাই পারে ত্রিপুরার সুদিন আনতে। ত্রিপুরার মানুষ বহু অত্যাচার দেখেছে। এখানে লেনিনের মূর্তি ভাঙা হয়েছে। পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। মানুষের মুখকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটাই মুখ ভারতে প্রতিবাদীদের সঙ্গে থেকেছে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আগামীদিনে তাঁরই নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরার মানুষের হয়ে কাজ করবে। তাই আমরা ত্রিপুরার মানুষের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।’’
গোটা দেশেই মানুষ বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আই প্যাক কর্মীদের বন্দি করে এভাবে তৃণমূলকে ভয় দেখানো যাবে না। এর আগে বিধানসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ বাংলায় এসে অনেক কিছুই বলেছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি কিছু। জানালেন মলয়। বললেন, আশা রাখি, ত্রিপুরাতেও আগামীদিনে তাদের ফিরিয়ে দেব মানুষ।
দু’টি টিকা নেওয়া সত্ত্বেও আই প্যাকের কর্মীদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কেন। প্রশ্ন করেছেন মলয় ঘটক।
‘মমতাই সবচেয়ে বড় বামপন্থী’ বললেন প্রাক্তন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের বামেরা বিধানসভা ভোটে যে ভুল করেছিলেন, সেই ভুল ত্রিপুরার বামপন্থীরা না করলেই ভাল, বললেন ব্রাত্য। জানালেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা না করে তাঁদের উচিত ওঁর পাশে দাঁড়ানো।
আইপ্যাককে সমন পাঠানো হল কেন, আইপ্যাক তো কোনও রাজনৈতিক দল নয়। প্রশ্ন করলেন ব্রাত্য।
আইপ্যাকের দুই ব্যক্তিকে তলব করেছে আগরতলা পুলিশ। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
বুধবার সকালেই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে ত্রিপুরায় ‘বন্দি’ ২৩ জন আইপ্যাক কর্মীর, দাবি তৃণমূলের। করোনা বিধির শর্তেই আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের। তবে তারপরও মুক্তি দেওয়া হয়নি।
আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন তাঁদের। ত্রিপুরায় যে ভাবে স্বৈরতান্ত্রিক উপায়ে আটকে রাখা হয়েছে আই-প্যাক কর্মীদের তার প্রতিকার করতেই এসেছেন তাঁরা।