বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট। ভিড় বাসিন্দাদের।-নিজস্ব চিত্র।
কয়েক সপ্তাহ আগে মগরার কুন্তীঘাটের ন’বছরের এক নাবালিকার উপরে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে তার পড়শি ভোলা সাউ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তার পরেও মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভোলার পরিবারের লোকজন বহিরাগত দুষ্কৃতীদের নিয়ে তাঁদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন ওই নাবালিকার আত্মীয়েরা। তার জেরে সোমবার থেকে ওই বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হল।
এ দিন নাবালিকার পরিবারের লোকজন ওই অভিযোগ মূলত তোলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। পরে ওসি সুখময় চক্রবর্তী বাহিনী নিয়ে গেলে তাঁর কাছেও মৌখিক অভিযোগ জানান তাঁরা। তবে, লিখিত অভিযোগ করেননি। নাবালিকার জ্যাঠামশাই বলেন, “হুমকির চোটে এখন বেশির ভাগ দিনই বাড়িতে থাকতে পারছি না। যদি খারাপ কিছু হয়, সেই ভয়েই পুলিশকে হুমকির অভিযোগ জানাইনি।” পক্ষান্তরে, দুষ্কৃতীদের সাহায্য নিয়ে কোনও রকম হুমকি দেওয়ার অভিযোগ মানেননি অভিযুক্ত ভোলার বাবা সুরেন্দ্র সাউ। তাঁর দাবি, ‘‘ছেলেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। এ বার আমাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
পুলিশ জানায়, পরিবারটির নিরাপত্তার কথা ভেবে দুই পুলিশকর্মীকে আপাতত সর্বক্ষণের জন্য ওই বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে। হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই পরিবারটি যদি নতুন অভিযোগ লিখিত ভাবে দায়ের করে তা হলে সেই অনুযায়ী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের সে কথা বলা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা আদতে মুজফ্ফরপুরের বাসিন্দা। তার মা মারা গিয়েছেন। বাবা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। কুন্তীঘাটে তার জ্যাঠামশােইর বাড়ি। গত ২২ জুন তিনি নাবালিকাকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। তার পর থেকে মেয়েটি সেখানেই রয়েছে। ভোলার বাড়ি পাশেই। গত ১৮ জানুয়ারি নিজের বাড়িতে টিভি দেখানোর নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে ভোলা ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তার পরই ভোলা বেপাত্তা হয়ে যায়। গত ২৫ জানুয়ারি সে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ ভোলাকে গ্রেফতার করে। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। ভোলাকে হাজতবাস করতে হচ্ছে।
নাবালিকার জ্যাঠামশাই স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, “কাজে যাওয়ার সময়ে কখনও বহিরাগত যুবকেরা পিছু নিয়ে মামলা তোলার জন্য হুমকি দিচ্ছে, কখনও রাতে দরজায় ধাক্কা মারছে। দরকার ছাড়া আমরা কেউই বেরোচ্ছি না। অনেক সময় অন্যত্র থাকতে হচ্ছে। এ ভাবে কি আর পারা যায়?”