সাবিরা। ছবি: সুব্রত জানা
আদালতের নির্দেশমতো উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বড়গ্রাম এলাকায় সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করতে গিয়ে বিপাকে পড়লেন পুলিশ এবং পূর্ত (সড়ক) দফতরের আধিকারিকরা। বুধবার দুপুরে কথাবার্তা চলাকালীন ওই জায়গায় বসবাসকারী সাবিরা বেগম নামে এক মহিলাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত হয়ে যায়।
পুলিশের অনুমান, উচ্ছেদ হওয়ার ভয়ে ওই মহিলা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। সাবিরার পরিবারের লোকজন পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। মহিলার শাশুড়ি সালেহার বেগম বলেন, ‘‘পুলিশ এসেই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই জায়গা থেকে সরে যাওয়ার জন্য বারেবারে পুলিশের কাছে এক সপ্তাহ সময় চাই। পুলিশ কোনও কথা না-শুনে টেনে-হিঁচড়ে আমাদের ঘর থেকে বের করতে থাকে। তখনই দেখি বৌমা ঘরের মধ্যে জ্বলছে।’’
এই হেনস্থার অভিযোগ মানতে চাননি হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায়। পুলিশি হেনস্থার কোনও ঘটনা ঘটেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সরকারি আধিকারিকরা জমি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন। কী কারণে ওই সময়ে মহিলা গায়ে আগুন লাগালেন, তার তদন্ত হবে।’’ পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরেই ওই পরিবারটিকে একাধিকবার জায়গা দখলমুক্ত করতে বলা হয়। তারা না-শোনায় ১৫ দিন আগে উচ্ছেদের নোটিস পাঠানো হয়। সেই নোটিস পরিবারটি গ্রহণ করেনি। তখন নোটিসটি বাড়িতে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তাতেও কাজ হয়নি।’’
বড়গ্রামে উলুবেড়িয়া-আমতা রোডের ধারে পূর্ত দফতরের জমিতে দীর্ঘদিন স্ত্রী সাবিরা, মা সালেহার এবং সাত ছেলেমেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন জরির কারিগর শেখ সাইফুদ্দিন। তাঁর ঘরের পিছনে বছর পাঁচেক আগে এক জন জমি কেনেন। কিন্তু তিনি জমিতে যাওয়ার রাস্তা না-পাওয়ায় আদালতে মামলা করেন। পক্ষ করেন পূর্ত দফতরকে। মাসছয়েক আগে কলকাতা হাইকোর্ট পূর্ত দফতরকে জমি দখলমুক্ত করতে নির্দেশ দেয়। সেই জমি দখলমুক্ত করতে গিয়েই এ দিন বিপাকে পড়ে পুলিশ। নোটিসমতো বিডিও, পূর্ত (সড়ক) দফতরের আধিকারিকরা এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাইফুদ্দিনের পরিবারকে জায়গা খালি করার জন্য বোঝাতে শুরু করেন। তখনই আচমকা সাবিরা ঘরে ঢুকে গায়ে আগুন লাগান বলে পুলিশের দাবি।