Water

‘জলস্বপ্ন’ পূরণ করবেন কে, ইঞ্জিনিয়ার বাড়ন্ত

বর্তমানে যত ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন, তাতে আগামী ১৫ বছরেও ওই প্রকল্প পুরোপুরি সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে দাবি ওই দফতরের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা আধিকারিকদের।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জলের সংযোগ দিতে ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে রাজ্যে। পাঁচ বছরের মধ্যে প্রতিটি বাড়িতে সেই সংযোগ দেওয়ার সময়সীমাও নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু সেই কাজ করবেন কারা? জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়ার কই?

Advertisement

বর্তমানে যত ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন, তাতে আগামী ১৫ বছরেও ওই প্রকল্প পুরোপুরি সম্পন্ন করা সম্ভব নয় বলে দাবি ওই দফতরের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা আধিকারিকদের। তাঁদের সংগঠন ‘স্টেট পাবলিক হেল্‌থ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দফতরের সচিবের কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়ে নিয়োগের জোরালো দাবি করা হয়েছে।

এ নিয়ে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সৌমেনকুমার মহাপাত্র বলেন, “কর্মিসংখ্যা কম থাকার অভিযোগ বা কোনও স্মারকলিপি পাইনি। কর্মিসংখ্যা কম বলে কোথাও কাজ আটকে আছে, এমন খবরও পাইনি। সে রকম হলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।”

Advertisement

প্রকল্পের হাল


হুগলিতে লক্ষ্যমাত্রা (চলতি অর্থবর্ষে):
২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৮০১টি বাড়িতে সংযোগ।


কাজ হয়েছে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত): ২৮ হাজার ১৫২টি। ৯.৫৮ শতাংশ। রাজ্যে সর্বোচ্চ।


৯ শতাংশের কিছু বেশি কাজ করতে পেরেছে হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা।


পূর্ব বর্ধমানে কাজ হয়েছে ৬.৪১%।
বাকি সব জেলায় ০.০২% থেকে ৩.৪৬%
-এর মধ্যে।

রাজ্যের একাধিক মহকুমার ওই দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়াররা জানান, ১৯৮৩ সাল থেকে আধিকারিক এবং কর্মী পরিকাঠামো প্রায় একই রয়ে গিয়েছে। সে সময় খালি পানীয় জলের কল বসানো হত। তারপরে কাজ অনেক বেড়েছে। যেমন, গ্রামীণ জলসরাহ প্রকল্প, বিভিন্ন হাসপাতালের দূষিত তরল বর্জ্য পরিশোধন, কিছু জায়গায় আর্সেনিক প্রশমন ইত্যাদি। এখন ‘জলস্বপ্ন’-র মতো বড় প্রকল্প চালু হওয়ার পরও পরিকাঠামো পাল্টায়নি। ফলে, প্রকল্পের কাজ সে ভাবে এগোচ্ছে না। কাজের মানেও ঘাটতি থাকছে।

গত ৬ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। খরচের অর্ধেক বহন করবে রাজ্য সরকার। বাকিটা কেন্দ্র। চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যে ৫৫ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩৫৮টি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হিসাব অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সংযোগ দেওয়া গিয়েছে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৬৬টি বাড়িতে। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার ৩.১২% কাজ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে হুগলিতে। অর্থবর্ষ শেষ হতে আর ছ’মাস বাকি। এই গতিতে কাজ হলে লক্ষ্যমাত্রা অধরাই থেকে যাবে বলে দাবি করছেন দফতরের অনেকে।

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু হুগলিরই চারটি মহকুমার জন্য একজন এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আছেন। প্রয়োজন আরও একজনের। সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আছেন পাঁচ জন। লাগবে আরও অন্তত দু’জন। জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আছেন ১০ জন। প্রয়োজন আরও অন্তত ৬ জন। হাওড়ায় এগ্‌জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আছেন মাত্র একজন। লাগবে আরও দু’জন। সহকারী ইঞ্জিনিয়ার চার জন আছেন। প্রয়োজন আরও চার জনের। জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আছেন ১০ জন। লাগবে আরও ৮ জন।

ইঞ্জিনিয়ারদের অপ্রতুলতার এমন ছবি রয়েছে অন্য জেলাগুলিতেও। প্রতি ব্লকপিছু একজন করে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদ সৃষ্টিরও দাবি উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement