নতুন অটোর পারমিট কবে, প্রশ্ন হুগলিতে

এক শ্রেণির আধিকারিকের ঢিলেমিতেই এই দেরি কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের অন্দরেই চর্চা চলছে। 

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:১১
Share:

২০০৪ সালে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়ায় অটোর পারমিট দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।

নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে প্রায় এক বছর আগে। তবুও অটোর পারমিট দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না হুগলি জেলা প্রশাসন। কেন এই দীর্ঘসূত্রিতা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এক শ্রেণির আধিকারিকের ঢিলেমিতেই এই দেরি কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের অন্দরেই চর্চা চলছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ (আরটিএ) দফতরে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই বোর্ডের সদস্য মুজফফর খান‌। তিনি বলেন, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, নদিয়ায় এই কাজ অনেক এগিয়েছে। হুগলি কেন পারছে না। তাঁর কথার সূত্রে আরটিও শুভেন্দুশেখর দাস জানান, চন্দননগর কমিশনারেট এলাকায় ঘিঞ্জি জায়গা রয়েছে। গাড়ি বাড়লে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হবে কি না, তা দেখার। এ নিয়ে কমিশনারেটের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বৈঠকে চূড়ান্ত পদক্ষেপের বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।

মুজফফর খান বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ঘোষিত অটো-নীতি রূপায়ণে দেরি হচ্ছে, এটা ঠিক। যাত্রীস্বার্থে বিষয়টি যত দ্রুত করা যায়, তা দেখা হবে। এতে কর্মসংস্থানও হবে।’’ শুভেন্দুশেখরবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও জবাব দেননি।

সরকারি সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়ায় অটোর পারমিট দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এ দিকে, যাত্রীসংখ্যা বেড়ে চলায় অটোর অভাব দেখা দেয়।২০১২ সালে হুগলি জেলা প্রশাসনের তরফে অটোর সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজনের কথা রাজ্যকে জানানো হয়। পরের বছর বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়। হাইকোর্ট পরিবহণ সচিবকে বিষয়টি দেখতে বলে। হুগলি জেলার তরফে পরিবহণ দফতরে দেওয়া রিপোর্টে আরও অটোর প্রয়োজনের কথা জানানো হয়। ২০১৬ সালে এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়া হয়। গত বছরের গোড়ায় ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে অটো-নীতি তৈরি করে রাজ্য। পারমিটের নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এর পরে হুগলির আরটিএ দফতরের তরফে নির্দিষ্ট কমিটি তৈরি করে বর্তমান রুটের পরিস্থিতি, আরও অটো লাগবে কি না এই বিষয়গুলি দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।

সংশ্লিষ্ট অনেকেরই অবশ্য বক্তব্য, পর্যাপ্ত অটো না থাকাতেই বেআইনি ভ্যানো বা টোটো জাঁকিয়ে বসেছে। দুর্ঘটনায় বিমার সুবিধাও রয়েছে। সর্বোপরি, সুযোগ থাকা সত্বেও নতুন অটোর পারমিট না দেওয়ায় রাজ্য সরকারের প্রচুর রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। অনেকে বলছেন, বহু জায়গায় নিয়ম ভেঙে টোটো চলছে। এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় থাকা টোটো নিয়ন্ত্রণ করে বৈধ অটোর ছাড়পত্র দিয়ে যানবাহনকে শৃঙ্খলায় বাধা প্রশাসনের পক্ষে কতটা সহজ, প্রশ্ন সেটাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement