প্রতীকী ছবি
‘অভিমান’ ছিল। মঙ্গলবার হরিপালে সাংগঠনিক সভায় আমন্ত্রণ না মেলায় তা আরও একটু বেড়েছে। তবে 'রাগ ও অভিমান’ থাকলেও দল ছাড়ার কথা ভাবছেন না হরিপাল থেকে নির্বাচিত তৃণমুলের জেলা পরিষদ সদস্য শম্পা দাস। তাঁর কথায়, ‘‘দেখতে চাই, দলে থেকে যাঁরা ‘অন্যায়’ করে চলেছেন, তাঁরা অন্য কোনও দলে যোগ দেন কিনা।’’
এ দিন হরিপালের লোকমঞ্চে জেলা মহিলা তৃণমূলের সভা ছিল। শম্পার অভিযোগ, সভায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সভায় ছিলেন শাসক দলের রাজ্য নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী করবী মান্না, মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত প্রমুখ। করবীর সঙ্গে শম্পার ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা অজানা নয় শাসক দলে। সেই কারণেই শম্পাকে সভায় ডাকা হয়নি বলে মনে করছেন নেতৃত্বের একাংশ। তবে করবী এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
কেন শম্পাকে সভায় ডাকা হয়নি, সেই উত্তরও মেলেনি সংগঠনের জেলা নেতৃত্বের থেকে। দিলীপের কোর্টে বল ঠেলে করবীর দাবি, ‘‘দলের জেলা পরিষদ সদস্যদের সভায় হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল দলের জেলা সভাপতির। উনি বলেছেন কিনা, তা জানা নেই।’’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি দিলীপ। প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘কিছু ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। দলীয় স্তরে মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’
তবে কি দলত্যাগের কথা ভাবছেন?
শম্পার উত্তর, ‘‘রাগ ও অভিমান নিয়েই তৃণমূলে থাকব। যারা দলকে ভাঙিয়ে অন্যায় করছে, দেখা যাক তাঁদের ক’জন দলে থাকেন।’’ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী হরিপালের তৃণমূল নেতা সমীরণ মিত্র সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। সেই আবহে শম্পা কী করেন, তার দিকেও নজর রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। সমীরণ দল ছাড়ায় তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে কিনা জানতে চাওয়ায় শম্পা বলেন, ‘‘সমীরণদা হরিপালের ভূমিপুত্র। ফলে, প্রভাব পড়লেও পড়তে পারে। সেটা পরে বোঝা যাবে।’’
হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে আমপানে পড়ে যাওয়া কিছু বহুমূল্য গাছ বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হয়েছিল বলে তৃণমূল-শাসিত আশুতোষ পঞ্চায়েতের প্রভাবশালী একটি অংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন শম্পা। এর পরেই তাঁকে দলে কোণঠাসা করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তাঁর বাড়ির দরজার সামনে একশো দিনের কাজের আওতায় বেশ কয়েকটি গাছও পুঁতে দেয় পঞ্চায়েত। সেই থেকে গাড়ি বার করতে পারছেন না শম্পা। তিনি জানান, ‘বিচার’ চেয়ে একাধিক বার জেলা নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছিলেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সুরাহা মেলেনি। তবে দলে সাম্প্রতিক রদবদলে তাঁকে জেলা সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাপতি জানান, আজ, মঙ্গলবার সেই পদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তুলে দেওয়া হবে শম্পার হাতে।