—প্রতীকী ছবি।
আর ‘বহিরাগত’ নয়। এ বার চাই ‘ভূমিপুত্র’। বিধানসভা নির্বাচনে উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রে এমনই দাবি উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের নেতাকর্মীদের একাংশ দলনেত্রীর কাছে এই দাবি পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন। এই কেন্দ্রের বিধায়ক ইদ্রিশ আলি কলকাতার বাসিন্দা। এর আগে যিনি ওই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন সেই হায়দার আজিজ সফির বাড়িও ছিল কলকাতায়। ব্লকের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, আগে দু’বার তাঁরা দলের নির্দেশ মেনে ‘বহিরাহত’কে প্রার্থী হিসাবে মেনে নিয়েছিলেন। এ বার কোনও ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করা হোক। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের অন্দরে এ নিয়ে গুঞ্জন ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। যদিও ইদ্রিশের যুক্তি, ‘‘আমি তো উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হয়েছি। তবে আমাকে বহিরাগত তকমা দেওয়া হবে কেন।’’ উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের পাল্টা যুক্তি, ‘‘ভোটার হলে কী হবে, উনি থাকেন কলকাতায়।’’
উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূলের সভাপতি বেণুকুমার সেনের বক্তব্য, ‘‘আমরা ২০১১ সাল থেকে এই কেন্দ্রে বহিরাগতদের প্রার্থী হিসাবে পেয়ে আসছি। এ বার জেলা সভাপতি মারফত দলনেত্রীর কাছে অনুরোধ করব, কোনও ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করা হোক।’’ পাশাপাশি অবশ্য তিনি এ-ও বলেন, ‘‘দলনেত্রী যাঁকে প্রার্থী করবেন, তাঁকেই মেনে নেব। আমরা শুধু আমাদের আবেগের কথা বললাম।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের সভাপতি পুলক রায় কোনও বিতর্কে ঢুকতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী ঠিক করেন দলনেত্রী।’’ আর ইদ্রিশের মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। রাজ্যের ২৯৪টি আসনেই প্রার্থী দলনেত্রী। কে কোন কেন্দ্রে টিকিট পাবেন সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন। আমরা কর্মী মাত্র। এখানে বহিরাগত বলে কোনও বিষয় নেই। আমরা সকলেই দলের সৈনিক।’’ তারপর যোগ করেন, ‘‘আমি উলুবেড়িয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হয়েছি। তাহলে আমি বহিরাগত হলাম কী করে। আমার গায়ে বহিরাগত তকমা লাগানো উচিত নয়।’’ বেণুর পাল্টা যুক্তি, ‘‘উনি তো মাত্র ছ’মাস হল পুরসভার ভোটার হয়েছেন। থাকেন তো কলকাতায়।’’ বিধানসভা ভোটের দামামা এখনও বাজেনি। তার বহু আগেই এই কেন্দ্রে প্রার্থী নিয়ে কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, গত ১০ অক্টোবর উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবনে দলের এক কর্মিসভায় ইদ্রিশের উপস্থিতিতেই ‘ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করতে হবে’ বলে শ্লোগান তোলেন কর্মীদের একাংশ। অস্বস্তিতে পড়েন জেলা নেতৃত্ব। সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। গত ৯ নভেম্বর একই ঘটনা ঘটে বাউড়িয়ায় তৃণমূলের এক কর্মিসভায়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ছাত্র-যুব আন্দোলন থেকে উঠে আসা কাউকে প্রার্থী হিসাবে চাইছেন উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশ। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সেই দাবিতে চিঠিও পাঠাতে শুরু করেছেন অনেকে। তাঁদের অনেকেরই প্রার্থী হিসাবে পছন্দ হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ সভাপতি আব্বাসউদ্দিন খান। এ বিষয়ে আব্বাসউদ্দিনের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের ২৯৪ টি আসনেই দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রার্থী। তিনিই যাকে প্রার্থী করবেন তাকেই মেনে নেওয়া হবে।’’