সিঙ্গুরের একটি হিমঘরের ফাঁকা শেড। শুক্রবার বের করা হয়নি আলু (উপরে)। ছবি: দীপঙ্কর দে। পান্ডুয়ায় হিমঘর থেকে আলু বের করার নোটিস (নীচে)। ছবি: সুশান্ত সরকার
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্য সরকার চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সব হিমঘর খালি করার নির্দেশিকা জারি করেছে। ওই সময়ের পরে ব্যবসায়ীরাও আর হিমঘরে আলু না-রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন। রাজ্যের হিমঘর মালিক সংগঠন জানিয়েছে, তারা সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসছে।
সরকারি ভাবে এ রাজ্যে হিমঘর খালি করার কথা ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই। কারণ, তারপরে হিমঘর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই আলু ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ভাবে হিমঘর-মালিকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়ে বাড়তি সময়ের জন্য আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন প্রতিবার। কিন্তু এ বার ব্যবসায়ীদের অভিমত, রাজ্য সরকার যখন চাইছে না, তখন তাঁরাও আর বাড়তি সময়ের জন্য হিমঘরে আলু সংরক্ষণের রাস্তায় হাঁটবেন না।
রাজ্যের আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত কয়েকটি মরসুমে সব পক্ষের অনুরোধে হিমঘরে আলু সংরক্ষণের সময়সীমার ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম হয়েছিল। এ বার আমরাও আর বেশি সময় হিমঘরে আলু রাখার পক্ষপাতী নই।’’
কিন্তু আর দু’দিনের মধ্যে রাজ্যের ৪৬২টি হিমঘর খালি করা যাবে কিনা, সে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। কারণ, এখনও অন্তত সাত লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে হিমঘরগুলিতে। ওই পরিমাণ আলু হিমঘরের শেডে রাখা সম্ভব কিনা, উঠছে সে প্রশ্নও। রাজ্যে সবচেয়ে বেশি হিমঘর (১৪২টি) রয়েছে হুগলিতে। এ দিন বিভিন্ন হিমঘরে সরকারি নির্দেশিকা সাঁটিয়ে দেওয়া হলেও কোনও হিমঘর থেকেই আলু বের করা হয়নি বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার-সহ কয়েকটি রাজ্যে এ বার পশ্চিমবঙ্গের আলুর ভাল চাহিদা রয়েছে। ফলে, এ বার রাজ্যেও আলু চড়া দামে বিকোচ্ছে। গত কয়েকদিনে আলুর কেজিপ্রতি দাম ৪৫ টাকাও ছুঁয়েছে। অথচ, রাজ্যের হিমঘরগুলিতে যে পরিমাণ আলু আছে, তাতে জোগানের সঙ্গে চাহিদার সমতা বজায় রাখা হলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকত বলেই মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতেই বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, এক শ্রেণির মজুতদার আলু জমিয়ে রাখছেন। রাজ্য সরকার সাধারণ ক্রেতাদের স্বার্থ না দেখে মজুতদারদের পক্ষ নিতে পারে না। তাই হিমঘর ফাঁকা করতে বলা হয়েছে। বাজারে আলুর জোগান বাড়লেই দাম কমবে।