Public Communication

ভাঙন রুখতে নেতাদের মধ্যে সংযোগে জোর

শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হুগলির কিছু নেতাও যে দল ছাড়বেন, তা এক রকম আগাম জেনেই গিয়েছিলেন হুগলির তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০৫
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিজেপি চাইছে, হুগলিতে শাসকদলের মধ্যে ভাঙনের প্রক্রিয়া জারি রাখতে। আর শাসকদল চাইছে, ভাঙন মেরামত করে আর কেউ যাতে দলছুট না হন, সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে। দলের তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে জনসংযোগে জোর দিচ্ছে তারা।

Advertisement

শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হুগলির কিছু নেতাও যে দল ছাড়বেন, তা এক রকম আগাম জেনেই গিয়েছিলেন হুগলির তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু সেই দল ভাঙার অভিঘাত ঠিক কতটা হবে, তা নিয়েই এতদিন চিন্তিত ছিলেন তাঁরা। শনিবার শুভেন্দুর সঙ্গে দল ছেড়েছেন হুগলির ছয় তৃণমূল নেতা। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— আরামবাগ থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের সদস্য সমীরণ মিত্র, পুরশুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ রহমান এবং ডানকুনির বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে সমীরণবাবু ছাড়া অন্য কারও ক্ষেত্রে সংগঠনে বিশেষ সমস্যা হবে না বলেই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।

তৃণমূল সূত্রের খবর, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেয়েছিলেন, সমীরণবাবু যাতে দল না ছাড়েন। দলনেত্রী নিজে তাঁকে ফোন করেন। কিন্তু সমীরণবাবু তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, মনস্থির করে নেওয়ার কথা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, তাতে হুগলিতে তৃণমূলের চেহারাটা কী হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে নানা মহলে। জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমার কাছে এখন অগ্রাধিকার, রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায় থেকে আমরা যে সব প্রকল্পের কাজ করেছি, তা মানুষের কাছে বেশি করে তুলে ধরা। সংগঠনকে ধরে রেখে আরও শক্তিশালী করতে এখন ওইসব প্রকল্পের প্রচারই আমার ‘পাখির চোখ’। অন্য কিছু নিয়ে ভাবছি না।’’

দিলীপ এই দাবি করলেও শনিবার সন্ধ্যা থেকেই ঘর গোছানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় হুগলি তৃণমূলে। দলত্যাগী দেবাশিসবাবু ডানকুনিতে যে দলীয় কার্যালয়ে বসতেন, সেখানেই এসে বসেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কল্যাণের সঙ্গে ছিলেন দিলীপ এবং জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়।

তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মানছেন, দলের ক্ষয় রোধ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। জেলায় সব স্তরের নেতাদের সঙ্গে জেলা নেতৃত্বের তরফে যোগাযোগ বাড়ানো হয়েছে। যেখানেই দলে ভাঙনের সম্ভাবনা আছে, এ বার থেকে সেখানে গিয়ে সরাসরি কথা বলবেন নেতারা।

বিজেপি-র শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, হুগলির বহু তৃণমূল নেতাই তলে তলে তাঁদের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দল পরিবর্তনের ব্যাপারে কথা বলেছেন।

ফলে, এ দফায় শুধু পাঁচ-সাত জনের দলত্যাগেই যে সব কিছুর শেষ হবে, তা মানছেন না অনেক তৃণমূল নেতাই। তাঁরা ঠারেঠোরে স্বীকার করছেন, জল আরও গড়াতে পারে।

তবে, এই দলবদলের জেরে হুগলিতে ফের রাজনৈতিক অশান্তি মাথাচাড়া দেবে কিনা, তা সাধারণ মানুষকে ভাবাচ্ছে। শনিবারই তারকেশ্বরের পিয়াসারায় বিজেপির বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement