কব্জা: এই জমি নিয়েই ৈতরি হয়েছে বিতর্ক।
পেরিয়ে গিয়েছে বছর তিনেক। সেই সময় হুমকি দিয়ে এলাকার এক তৃণমূল নেতা তাঁর জমি সামান্য দামে কাপসিট হাইস্কুলের নামে করিয়ে নিয়েছিলেন বলে এতদিনে অভিযোগ তুললেন আরামবাগের এক সিপিএম সমর্থক।
গোপাল পাল নামে কাপশিটের ওই সিপিএম সমর্থক ইতিমধ্যে ওই অভিযোগ প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরে জানিয়েছেন। ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে বলেছেন। গত ৩০ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন। তিনি চান, ওই স্কুলের গায়ে তাঁর ৭ শতক জমি ফেরত দেওয়া হোক। বিনিময়ে যে দামে তিনি জমি বিক্রি করেছিলেন, সেই এক লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেবেন বলেও গোপালবাবু জানান।
চলতি মাসের ৯ তারিখে জেলাশাসক ওই অভিযোগ নিয়ে পুলিশ সুপারকে তদন্তের জন্য বলেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশমতো গত শুক্রবার আরামবাগ থানা থেকে একদফা তদন্তও হয়। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।” অতিরিক্ত স্কুল পরিদর্শক (আরামবাগ) চন্দ্রশেখর জাউলিয়া বলেন, “স্কুলের জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে।”
যাঁর বিরুদ্ধে গোপালবাবুর অভিযোগ, শিশির সরকার নামে ওই তৃণমূল নেতা বছর তিনেক আগে কাপসিট হাইস্কুলের সভাপতি ছিলেন। আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদেও ছিলেন তিনি। অভিযোগ নস্যাৎ করে তাঁর দাবি, ‘‘আমি যদি জোর করে জমি নিয়ে থাকি, তা হলে সেই সময় ওই জমি-মালিক থানায় বা অন্যত্র অভিযোগ করেননি কেন? জমিটা নিজের বা পরিবারের কারও নামে করিনি। গ্রামের স্কুলের স্বার্থেই তাঁকে জমিটা বিক্রি করতে অনুরোধ করিছিলাম। তিনি সেই জমি রেজিষ্ট্রিও করে দিয়েছেন।’’ কাপসিট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুরারীমোহন বেরা বলেন, ‘‘জায়গাটা স্কুলের প্রয়োজন ছিল। সেই সময় শিশিরবাবুকে বলেছিলাম। ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি গোপালবাবু জমিটা স্কুলকে বিক্রি করেন। এর পিছনে কী গল্প আছে জানা নেই। জমিটা এখন স্কুলের। সেখানে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে।”
এতদিন পরে কেন অভিযোগ করছেন গোপালবাবু?
গোপালবাবুর দাবি, ‘‘ভয়ে সে সময় অভিযোগ করতে পারিনি। এখন পুলিশ প্রশাসন অনেক সক্রিয়। ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করার সুযোগ পেয়েছি। তাই অভিযোগ জানিয়েছি।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ২০১৬ সালে সিপিএম করার ‘অপরাধে’ শিশিরবাবু সদলবলে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে ওই জমি স্কুলের নামে লিখে দেওয়ার দাবি জানান। না দিলে গ্রামছাড়া করার এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। সেই ভয়ে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় কেনা জমি স্কুলকে এক লক্ষ টাকায় তিনি বিক্রি করতে বাধ্য হন। ‘রেজিস্ট্রি’র দিন তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলেও গোপালবাবুর অভিযোগ।