—প্রতীকী চিত্র
দীর্ঘদিন ধরে কোন্নগরের দমকলকেন্দ্র চলছে জরাজীর্ণ ভবনে। বিপদের আশঙ্কা রয়েছে সেখানকার কর্মীদের। তাই কেন্দ্রটি সরিয়ে নেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে দমকল বিভাগ। এতে আপত্তি তুলেছেন স্থানীয়েরা। দমকলকেন্দ্রটি ওই জায়গাতেই রাখার জন্য তাঁরা নাগরিক মঞ্চও গড়েছেন।
কোন্নগরে জিটি রোডের ধারে, একটি মন্দিরের সামনের জমিতে ১৯৪৩ সালে তৈরি হয় দমকলকেন্দ্রটি। কিন্ত কেন্দ্রটি সংস্কারের অভাবে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমনই, ভবনটি ভেঙে পড়ে দমকল কর্মীরা জখম হতে পারেন। সে কথা তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। ভবনটির বেহাল দশায় কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত দমকল কর্তৃপক্ষও। সম্প্রতি তাঁরা ঠিক করেন, কোন্নগর থেকে সরিয়ে ওই কেন্দ্রটি শ্রীরামপুরের দমকলকেন্দ্রে মিশিয়ে দেওয়া হবে। কর্মীদেরও সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে। বর্তমানে কোন্নগর দমকলকেন্দ্রে মোট তিনটি ইঞ্জিন রয়েছে। কর্মিসংখ্যা অন্তত ৪০।
দমকল সূত্রের খবর, কোন্নগরের কেন্দ্রটি মন্দির কমিটির ট্রাস্টি বোর্ডের থেকে ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছিল। কিন্তু ট্রাস্টির তরফে বহুদিন ভবনটির কোনও রকম সংস্কার করা হয়নি বলেই তা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ওই দমকলকেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, ‘‘আমরা আগুন আর বিপদগ্রস্ত মানুষকে নিজেদের জান কবুল করে বাঁচাই। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আমাদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।’’
কোন্নগরের দমকলকেন্দ্র সরানোর ভাবনাচিন্তা হচ্ছে, এ কথা জানাজানি হতেই কোন্নগরের স্থানীয় মানুষজন আপত্তি জানান। তাঁদের দাবি, স্বাধীনতারও আগে তৈরি ওই কেন্দ্রটিকে সরানো যাবে না। নাগরিক মঞ্চের পক্ষে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের এখানে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা রয়েছে। আগুন লাগলে দমকলের দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছনো জরুরি। কোনও বিপদ ঘটলে দশ কিলোমিটার দূরের শ্রীরামপুর থেকে দমকলের ইঞ্জিন আসার আগেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যাবে।’’
দমকলের উপ-অধিকর্তা সনৎ মণ্ডল বলেন,‘‘আমরা বিকল্প কিছু ব্যবস্থার জন্য সব রকম চেষ্টা করছি। ওই মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গেও আমরা কথা বলব। আসলে দমকলকেন্দ্রের ভবনটির যা অবস্থা, তাতে ভেঙে বিপদ ঘটতে পারে।’’ নাগরিক মঞ্চের দাবিকে গুরুত্ব দিয়েছেন কোন্নগরের পুরপ্রধান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওই দমকলকেন্দ্রটি নিয়ে স্থানীয় মানুষের আবেগ রয়েছে। এক সময় কোন্নগরের এই ভবনেই ছিল দমকলের ডিভিশনাল হেড কোয়ার্টার। আমরা চাইছি দমকলকেন্দ্র কোন্নগরেই থাক। পুরসভা মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবে। মানুষের চাহিদাকে সম্মান জানিয়ে বর্তমানে যেখানে দমকলকেন্দ্র রয়েছে, সংস্কার করে দেবে পুরসভা।’’
পুরসভার ওই কাজে নামলেও তা সময়সাপেক্ষ বলে মনে করছেন দমকলের উপ-অধিকর্তা সনৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দমকল ভবনের যা অবস্থা, দ্রুত এখান থেকে সরে যেতে হবে। পুর কর্তৃপক্ষ পারলে আমাদের বিকল্প জায়গা দিক, পাশাপাশি আলোচনাও চলুক।’’