প্রতীকী ছবি।
বৃষ্টির মধ্যে নিকাশি নালায় পড়ে গোঙাচ্ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। বৃহস্পতিবার সাতসকালে চুঁচুড়ার কাপাসডাঙা পালপুকুর এলাকায় ওই দৃশ্য দেখেও করোনা-আতঙ্কে তাঁকে উদ্ধারে এগোননি কেউ। শেষমেশ এলাকার সিপিএম নেতা সমীর মজুমদার নিজেই নালায় নেমে বৃদ্ধকে উদ্ধার করলেন। তখন অবশ্য দুই যুবক এগিয়ে আসেন।
করোনা-আতঙ্কে বহু ক্ষেত্রেই ‘অমানবিকতা’ বা ‘অসহযোগিতা’র নজির সামনে আসছে। সরকারি স্তরে এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে প্রচারও করা হচ্ছে। অন্য কেউ এ দিন এগিয়ে না এলেও সিপিএম নেতা সমীর যে ভাবে এ দিন রামচন্দ্র রজক নামে ওই বৃ্দ্ধকে উদ্ধার করেন, তাতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁর স্ত্রী সুশীলা। ওই বৃ্দ্ধ মানসিক ভারসাম্যহীন। বাড়ি চকবাজার নিত্যমঠ মোঘলপুরা লেনে। সমীরই তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেন। মোঘলপুরা লেন এবং পালপুকুর— দু’টি এলাকাই কাছাকাছি। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ে। সমীর ওই ওয়ার্ডেরই বিদায়ী কাউন্সিলর তথা বিদায়ী পুরবোর্ডের বিরোধী দলনেতা। সুশীলা বলেন, ‘‘স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন।
বুধবার রাতে কখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, বুঝতে পারিনি। ওঁকে সময়মতো উদ্ধার না করা হলে প্রাণে বাঁচতেন না। করোনা-আতঙ্ক উপেক্ষা করে সমীরবাবু যে ভাবে ওঁর প্রাণ বাঁচালেন, তাতে আমরা চিরকৃতজ্ঞ।’’
উদ্ধারের পরেই বৃদ্ধকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সিপিএম নেতার উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মোঘলপুরা লেনের বাসিন্দা প্রিয়ব্রত সাঁধু। সমীর জানান, এলাকার লোকজনের থেকেই তিনি ওই বৃদ্ধের নালায় পড়ে থাকার খবর পান। কিন্তু সকলেই করোনার কথা বলে উদ্ধারকাজ এড়িয়ে যান।
ওই সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘বৃষ্টির মধ্যে বৃদ্ধ মানুষটি যে ভাবে নালায় পড়েছিলেন, তাতে প্রাণ বাঁচানোটাই প্রথম কাজ ছিল। তাই আর কিছু ভাবিনি।’’