আলোচনা: তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদের (টিডিএ)-র প্রথম বৈঠকে হাজির ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র
ফি-বর্ষায় জল থইথই পরিস্থিতি হয় তারকেশ্বরের। সেই দুর্ভোগ থেকে মানুষকে রেহাই দিতে তারকেশ্বরের নিকাশি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজতে কেএমডিএ-কে দায়িত্ব দিল সদ্যগঠিত তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ (টিডিএ)। মন্দির চত্বর এবং গ্রামীণ এলাকাকে এলইডি আলোয় সাজানোর পরিকল্পনাও নিয়েছে তারা। গড়া হবে বাসস্ট্যান্ডও।
শনিবার দুপুরে তারকেশ্বর পুরভবনে টিডিএ-র প্রথম বৈঠক বসে। তারকেশ্বর মন্দিরকে ঘিরে পর্যটন বিকাশের প্রভূত সম্ভাবনা থাকায় সম্প্রতি হুগলসিতে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টিডিএ তৈরির কথা ঘোষণা করেন। টিডিএ-র চেয়ারম্যান, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে ওই বৈঠকে হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল ছাড়াও অন্যান্য দফতরের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই নতুন সিদ্ধান্তগুলি
নেওয়া হয়।
কয়েক বছর আগে বর্ষায় স্থানীয় একটি নিকাশি খাল উপছে জল তারকেশ্বর মন্দিরের দোরগোড়া ছুঁয়েছিল। প্রতি বছরই বর্ষায় প্লাবিত হয় তারকেশ্বর পুর এলাকার একটি বড় অংশ। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতেই পরিকল্পনা মাফিক নিকাশির উপর জোর দিয়েছেন ফিরহাদ। সারা বছর ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে মন্দিরে। শ্রাবণী মেলা এবং কিছু বিশেষ দিনে ভিড় হয় লক্ষাধিক। পুণ্যার্থীদের অনেকেই বাসে ও গাড়িতে তারকেশ্বরে আসেন। যানজটে নাকাল হন শহরবাসী। এই পরিস্থিতি এড়াতেই এ বার সেখানে নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে টিডিএ-র বৈঠকে। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত কথা দিয়েছেন বাসস্ট্যান্ডের জন্য জমির সমস্যা হবে না। জমি পুরসভার হাতেই রয়েছে।’’
বাসস্ট্যান্ড নিয়ে ফিরহাদ আশার কথা শোনালেও ওই প্রকল্প নিয়ে পুরপ্রধান স্বপন সামন্তের সঙ্গে উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর কাজিয়া বেঁধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শহরের অনেকেই। অবসরপ্রাপ্ত এক পুরকর্মীই বলেন, ‘‘‘পুরসভা চালানোর বহর তো আমরা প্রতিদিন দেখছি। তাই কী করে আশা করব টিডিএ-র কাজ পুর কর্তৃপক্ষ সঠিক ভাবে করবেন?’’ আশঙ্কাকে উস্কে দিয়েছে উপ-পুরপ্রধান উত্তর কুণ্ডুর বক্তব্যও। তিনি বলেন, ‘‘পুরপ্রধান কাউকেই কাজের সুযোগ দেন না। তিনি বিশ্বাস করেন না কাউকে। এত অবিশ্বাস নিয়ে কেউ কাজ করতে পারে?’’ অভিযোগ মানেননি পুরপ্রধান।
তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী একটি মেডিক্যাল কলেজ গড়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। সেই মতো এ দিনই ওই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দেখতে যান হুগলির জেলাশাসক। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মেডিক্যাল কলেজের জন্য জরুরি ভিত্তিতে জমি প্রয়োজন। সেই জমি দেখা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ হাসপাতালেও অনেকটাই সরকারি জমি রয়েছে। এখন দেখার পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়।