এই ব্যানার ঘিরেই জল্পনা চলছে। —নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শনিবার। রবিবার থেকেই পান্ডুয়ার নানা জায়গায় তাঁর ছবি দেওয়া ব্যানার ঘিরে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে।
ব্যানারে লেখা— ‘দাদা, পান্ডুয়ার জনগণ তোমার অপেক্ষায়’। সৌজন্যে— ‘দাদার সৈনিকরা’। এই ‘দাদার সৈনিক’ কারা, সে খোঁজ তারা শুরু করেছে বলে দাবি করেছে যুযুধান দু’দলই। তৃণমূল একইসঙ্গে বিজেপিকে দুষছেও। এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও বাদ যাচ্ছে না।
বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডলের নেতা অশোক দত্তের দাবি, ‘‘ওই ব্যানার আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা লাগায়নি। দলের নির্দেশ থাকলে আমরা শুভেন্দুবাবুর ব্যানারে দলীয় চিহ্ন দিতাম। তা নেই। কারা ব্যানার লাগাচ্ছে, আমরাও খোঁজ করছি।’’ পক্ষান্তরে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘ওই ব্যানার বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরাই লাগাচ্ছেন।’’
অসিতবাবু ওই দাবি করলেও ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, যাঁরা দলে সম্মান পাচ্ছেন না, তাঁদের অনেকেই শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরাও ওই ব্যানার লাগাতে পারেন।
পান্ডুয়ায় তৃণমুলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিছুতেই মেটেনি। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পান্ডুয়ায় বড় জনসভা করেছিলেন। কিন্তু এই বিধানসভা আসনটি দখল করতে পারেননি। গত বছর লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমুল এই আসনটি হারায়। এর পিছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছিলেন নেতৃত্বের একাংশ। কিছুদিন আগে অসিত চট্টোপাধ্যায় ব্লক সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অন্য গোষ্ঠীর নেতারা। জানিয়ে দেন, তাঁরা অসিতবাবুকে মানছেন না। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে শুভেন্দুর ব্যানার ঘিরে ফের একবার সেই দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে।
ব্যানার ঘিরে শুধু কী দু’দলের চাপান-উতোর! সাধারণ মানুষের দাবি, পুলিশও বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না। কোথায় কোথায় পোস্টার পড়ছে, তার ছবিও তুলছে পুলিশ। পান্ডুয়া স্টেশন রোডের এক প্রবীণ বাসিন্দার দাবি, ‘‘রবিবার সকালে এখান থেকে পুলিশ ব্যানারের ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে শাসকদলের নির্দেশেই করেছে। কী যে হচ্ছে, বুঝছি না।’’ পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, ওই ব্যানারের ছবি পুলিশের কেউ তোলেননি।