আমপানে ভেঙে পড়া গাছের গুঁড়ি থেকে তৈরি হচ্ছে মূর্তি। নিজস্ব চিত্র।
শুধু পরিবেশ রক্ষা নয়, শহরের সৌন্দর্য বিবর্ধনেও গাছগুলি ছিল অপরিহার্য। কিন্তু আমফান (প্রকৃত উচ্চারণ উমপুন)-এর তাণ্ডবে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ে। এবার সেই সব ভেঙে পড়া গাছগুলিকে অভিনব উপায়ে সংরক্ষণের পথ নিল হুগলির উত্তরপাড়া পুরসভা। গাছগুলিতে যেন নতুন করে ‘প্রাণের সঞ্চার’ হচ্ছে এক শিল্পীর হাত ধরে।
আমফানের জেরে ২০ মে লন্ডভণ্ড হয়ে যায় কলকাতা-সহ একাধিক জেলা। হুগলিতেও ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার গাছ ভেঙে পড়ে। বাদ যায়নি উত্তরপাড়া পুরসভা এলাকাও। সেখানেও শতাধিক গাছ উপড়ে পড়ে। পুরসভা কিছু গাছকে ক্রেন বা জেসিবি মেশিন দিয়ে তুলে অন্য জায়গায় বসায়। কিন্তু কিছু পুরনো গাছের ক্ষেত্রে তা সম্ভব ছিল না। সেই সব গাছকেই এবার অন্য ভাবে সংরক্ষণ করতে চাইছে উত্তরপাড়া পুরসভা।
উত্তরপাড়ার দারুশিল্পী বিকাশচন্দ্র হালদারের কাছে দেওয়া হয়েছে এমন কয়েকটি পুরনো গাছের গুঁড়ি। আর দীর্ঘ ৩ মাস ধরে তিনি বাটালি ছেনি হাতুড়ি দিয়ে সেই গুঁড়িতে ফুটিয়ে তুলছেন একের পর এক মূর্তি। ইতিমধ্যেই ৪টি মূর্তি তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।
বিকাশ তাঁর এই কাজ সম্পর্কে বলেন, “ধ্বংসের পর আসে শান্তি। সেই শান্তির দূত গৌতম বুদ্ধ, আর প্রকৃতিরূপী এক নারীর মূর্তি করা হয়েছে। যেখানে জল ফুল লতাপাতা রয়েছে। নারীমূর্তির হাতে বাঁশি দিয়ে বোঝানো হয়েছে জীবনের সুরকে।”
মূর্তিগুলি পুর-প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উত্তরপাড়া পুর প্রশাসক দিলীপ যাদব বলেন, “পুরসভার কর্মীরা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অনবদ্য। ধ্বংসের পরেই তো নতুন সৃষ্টি হয়। পুরনো শহরের স্মৃতি বহনকারী এই গাছগুলিকে কিছুটা হলেও এ ভাবে সংরক্ষণ করা গেলে ভাল। সময় চলে যাবে, আমফানের স্মৃতি রয়ে যাবে এই সব কাঠের মূর্তিতে।”