নারায়ণ দাস। নিজস্ব চিত্র
দিন পাঁচেক আগে বাসি-পচা মুরগির মাংস মজুত করে রাখার অভিযোগে হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়া থেকে দুই কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এ বার একই ঘটনা চন্দননগরেও।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চন্দননগরের গঞ্জের বাজার এলাকার তাঁতিবাগানের বাসিন্দা, মুরগির মাংস বিক্রেতা নারায়ণ মণ্ডলের বাড়ির ফ্রিজ থেকে প্রায় ১০০ কেজি পচা মাংস উদ্ধার করল পুলিশ। ব্যবসার জন্য পচা মাংস মজুত করার অভিযোগে নারায়ণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজারে তাঁর দোকান রয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শহরে শোরগোল পড়ে। কারণ, জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্য ইতিমধ্যেই শহরে বহু অস্থায়ী খাবারের দোকান হয়েছে। ওই মাংস সেই সব দোকানে সরবরাহ করার জন্য রাখা ছিল কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ওই মাংস আমরা খাদ্য দফতরের পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছিলাম। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, ওই মাংস মুরগির। কিন্তু তা বেশ কয়েক দিনের পুরনো। খাওয়ার উপযোগী নয়। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় অস্থায়ী হোটেলে সরবরাহ করার জন্য ওই মাংস রাখা হয়েছিল কিনা, আমরা তা খতিয়ে দেখছি। পুজোর সময় খাবারের দোকান এবং হোটেলে নজরদারি চালানো হবে।’’
গত শনিবার রাতে প্রথমে চুঁচুড়ার তালডাঙা বাজার এবং তারপরে কামারপাড়ায় দু’টি মাংসের দোকানে হানা দেয় জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। দু’টি দোকান থেকে অন্তত ২০ দিনের বাসি-পচা প্রায় ৩০০ কেজি মাংস উদ্ধার করে নষ্ট করে দেওয়া হয়। গ্রেফতার করা হয় দুই কারবারিকে। গত বছরের মাঝামাঝি ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে উত্তাল হয়েছিল কলকাতা। মৃত পশুদের মাংস বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁয় সরবরাহ কারবারের কথা প্রকাশ্যে আসে। ধরাও পড়ে কয়েকজন। পুলিশ, পুরসভা এবং খাদ্য দফতর হোটেল-রেস্তরাঁয় হানা দেওয়া শুরু করে। অনেক জায়গা থেকেই বাসি-পচা মাংস মেলে। একই ভাবে অভিযান শুরু হয় জেলার হোটেল-রেস্তরাঁতেও। তারপরে সব কিছু চুপচাপ ছিল। কিন্তু শনিবার পচা মাংস মজুতের ঘটনা সামনে আসায় শোরগোল পড়ে।
সেই শোরগোল পুজোর চন্দননগরেও। দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগ রয়েছে কিনা তা নিয়ে জল্পনাও শুরু হয়েছে। পুলিশ এ নিয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাতে পারেনি। জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়ে প্রশাসনের প্রস্তুতি বৈঠকেও খাবারের দোকানে পচা মাংসের প্রসঙ্গ উঠেছিল। পুলিশের তরফে খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের বিনজরদারি চালানোর আবেদন করা হয়েছিল। এ বার সেই পচা মাংস উদ্ধার হওয়ায় পুলিশ জানায়, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খবর পেয়ে তাঁতিবাগানে নারায়ণের বাড়িতে হানা দেওয়া হয়। দু’টি ফ্রিজ থেকে প্লাস্টিক মোড়া অবস্থায় মাংস বাজেয়াপ্ত হয়।