—প্রতীকী ছবি
ফের ভরদুপুরে জাতীয় সড়কে ছিনতাই হাওড়ায়।
সোমবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার জোড়া কলতলায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ব্যবসায়ীর দাবি, এক সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ সকলের চোখের সামনেই ওই ঘটনা ঘটে। কিন্তু বন্দুক দেখে কেউই এগিয়ে আসার সাহস পাননি।
গ্রামীণ হাওড়ায় জাতীয় সড়কে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিলই। এ দিনের ঘটনায় তা আরও বেড়েছে। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গাড়ি-চালকদের মধ্যে। রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ছিনতাই হওয়া টাকাও উদ্ধার হয়নি।
চুরি-ছিনতাই যে বেড়েছে, তা মানছেন হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সৌম্য রায়। তিনি জানান, দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। দুষ্কর্ম বন্ধ করতে জাতীয় সড়কে টহলদারি বাড়ানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিনের ঘটনার শিকার বিশ্বজিত চন্দ উলুবেড়িয়ার নোনা এলাকায় থাকেন। তিনি ভোজ্য তেলের ডিস্ট্রিবিউটর। সোমবার সকালে তিনি ব্যবসার কাজে বেরিয়েছিলেন। পাঁচলা, চেঙ্গাইল, বাউড়িয়া প্রভৃতি জায়গা থেকে পাওনা টাকা আদায় করে মোটরবাইকে ফিরছিলেন। তাঁর অভিযোগ, বেলা দেড়টা নাগাদ জোড়া কলতলায় আচমকাই একটি বাইকে সওয়ার তিন যুবক চলন্ত অবস্থাতেই তাঁর কাঁধ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। টাল সামলাতে না পেরে তিনি পড়ে যান।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমি পড়ে যেতে ওই তিন জন বাইক থেকে নেমে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে আমার কাছে এসে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। বিশ ফুট দূরে এক সিভিক ভলান্টিয়ার ডিউটি করছিলেন। বাইক থেকে ছিটকে পড়ার সময় আমার চিৎকারে বেশ কয়েক জন জড়ো হন। কিন্তু বন্দুক দেখে কেউ প্রতিরোধ করতে পারেননি।’’ দুষ্কৃতীরা ব্যাগ নিয়ে বাইক ছুটিয়ে কোলাঘাটের দিকে চলে যায় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
দিন দশেক আগে রাজাপুরের খলিসানির কাছে স্বামীর মোটরবাইকে সওয়ার এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়েছিল এক দুষ্কৃতী। পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকে এখনও ধরতে পারেনি। হারের সন্ধানও পায়নি। চার দিন আগে উলুবেড়িয়া শহরের গরুহাটা মোড়ে এক ওষুধ ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসের জানালা ভেঙে লক্ষাধিক টাকা চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনারও কিনারা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জাতীয় সড়কে পুলিশের টহলদারি এখন কার্যত দেখাই যায় না।
চুরি-ছিনতাই রুখতে বছর খানেক আগে জাতীয় সড়কে পুলিশ সিসিক্যামেরা লাগিয়েছিল। আমপানে সেগুলির অধিকাংশ বিকল হয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে, দুষ্কর্ম বাগে আনতে সব চেষ্টাই করা হবে বলে পুলিশকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন।