—ফাইল চিত্র।
বন দফতরের হিসেব বলছে, আমপানে হুগলির ১৮টি ব্লকে অন্তত ৭০ হাজার গাছ পড়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে একটি বড় অংশই ছিল সরকারি জায়গায়। বিধি অনুয়ায়ী, সেই সব গাছের মূল্য নির্ধারণ করে টেন্ডারের বিক্রির পরে সরকারি কোষাগারে সেই টাকা জমা পড়ার কথা। কিন্তু ছ’মাস কেটে গেলেও কোনও সরকারি দফতরই উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা মানছেন, ‘‘আমপানের তাণ্ডব এতটাই বেশি ছিল যে, তখন রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে জনজীবন স্বাভাবিক করাটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল প্রশাসনের কাছে। পড়ে যাওয়া গাছ সংরক্ষণের ব্যবস্থা তখন সে ভাবে করা যায়নি।’’
আরামবাগ বাদে আমপানে হুগলির তিন মহকুমাতেই ব্যাপক ক্ষতি হয়। পঞ্চায়েত, সরকারি দফতর, হাসপাতাল, পুর এলাকার বিভিন্ন সরকারি জায়গায় বহু গাছ ঝড়ে পড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে সেই ঝড়ের পর স্তব্ধ হয়ে যাওয়া জনজীবনকে সচল করতে সেই সব গাছ সরানোর উদ্যোগ শুরু হয়। বহু জায়গাতে গ্রামবাসীরাই সেই সব গাছ কেটে নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। কিন্তু সরকারি ভাবে সেই সব গাছ সংরক্ষণ করে বন দফতরকে দিয়ে তার মূল্য নির্ধারণের পরে বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ার কথা। কোথাও কোথাও ওই সব গাছ অনৈতিক ভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। হরিপালে জেলা পরিষদের এক সদস্যা স্থানীয় এক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রায় একই অভিযোগ তোলেন।
ঝড়ের পর রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়ে ছিলেন, যে সমস্ত সরকারি জায়গায় ঝড়ে গাছ পড়েছে, তা দেখে টেন্ডার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু হুগলিতে তা আর হয়নি। পরিণত সরকারি গাছ যে যেমন ভাবে পেরেছেন, নিজেদের কুক্ষিগত করেছেন।
জেলা বন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বন দফতরে বর্তমানে যে সংখ্যায় কর্মী রয়েছেন, তাতে আমাদের পক্ষে ওই কাজ বাস্তবে করা কার্যত অসম্ভব। কোনও গাছ সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর নিজেরা কেটে সংরক্ষিত করে খবর দিলে বন দফতর সেই তার মূল্য নির্ধারণের কাজটুকুই মাত্র করে দিতে পারে। তারপর সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের ওই গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে অনলাইনে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কথা।’’
কিন্তু তা হয়নি।