হিমঘরে চলছে আলু বাছাই।
চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ভাঁড়ারে টান। উৎসবের মরসুমে লাফিয়ে বাড়ছে আলুর দাম।
খোলা বাজারে চন্দ্রমুখী আলু বিকোচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে। জ্যোতি আলুর কেজিপ্রতি দাম ১৬ থেকে ১৮ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। অর্থাৎ, এখন এক বস্তা (৫০ কেজি) জ্যোতি আলুর দাম পড়ছে ৮০০-৯০০ টাকা, চন্দ্রমুখী ১২৫০-১৩০০ টাকা।
কিন্তু কেন এত চড়া দাম?
আলু ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এখনও রাজ্যের হিমঘরগুলিতে সাড়ে ১৬ লক্ষ টন আলু মজুত রয়েছে। ফলে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে রাজ্যে আলুর দাম বিশেষ বাড়ার কথা নয়। কিন্তু সেই আলুর একাংশ চলে যাচ্ছে ভিন্ রাজ্যে। আর এক অংশ চাষিরা পরবর্তী আলু মরসুমে চাষের জন্য বীজআলু হিসেবে সংরক্ষণ করে রাখছেন। তাই রাজ্যের বাজারে জোগানে টান। কয়েক বছর আগে রাজ্য সরকার ভিন্ রাজ্যে অবাধে আলু রফতানির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছিল। তার ফলে আলু ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারের উপর ক্ষুব্ধ হন। এ বার সরকার সে পথে হাঁটেনি।
আলু ব্যবসায়ীরা এখন বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় আলু পাঠাতে ব্যস্ত। আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই তিন রাজ্যে অন্য বছর এই সময় সাধারণত উত্তরপ্রদেশ থেকে আলু সরবরাহ করা হয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ এ বার আলুর জোগান দিতে পারছে না। তাই এ রাজ্যে আলুর বাজারের এই হাল।’’ কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘প্রতি বছরই উৎসবের মরসুমে আলুর দাম কিছুটা বাড়ে। কিছু ক্ষেত্রে ফড়েরা সমস্যা করছে। পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি।’’
গত মরসুমে এ রাজ্যে আলুর উৎপাদন কম হয়েছিল। তার ফলে হিমঘরগুলিতে আলু মজুতের পরিমাণও কমে। সামনে আবার আলুর মরসুম আসছে। হিমঘরগুলিতে যে আলু এখনও মজুত আছে, তার অনেকটাই চাষিদের। অর্থাৎ বীজআলু। ওই আলু দিয়েই সামনের মরসুমে চাষ করবে চাষিরা। তাই ওই আলু চাষিরা এখন হিমঘর থেকে বের করতে আর আগ্রহী নন। তাতে বীজআলুর জোগানে টান পড়বে বলে জানান লালুবাবু। অবশ্য রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই রাজ্যের হিমঘরগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। তেমনটাই বিধি। তার আগেই মজুত সব আলুই হিমঘর থেকে বের হয়ে যাবে।