গোঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বসতবাড়ি। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
আমপানে ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত গোঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মেয়ে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় শোরগোল পড়েছে। বিজেপির তরফে এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বেঙ্গাই পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সভাপতি অনিমা কাটারির অবশ্য দাবি, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত এবং আর্থিক অসচ্ছলতার জন্যই তাঁর মেয়ে সুজাতা মালিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। দুর্নীতির প্রশ্ন নেই।
সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি নতুন ঘর তৈরিতে ১০০ দিনের কাজের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। সম্প্রতি সুজাতার নামে ওই কাজের মজুরি ঢোকার পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। গত শুক্রবার বিজেপির তরফে ডাক মারফত এ ব্যাপারে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়ে তদন্ত দাবি করা হয়। এলাকার বিজেপি নেতা তথা দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার উপজাতি মোর্চার সভাপতি সৌমেন হেমব্রম বলেন, ‘‘কিসের ভিত্তিতে সভাপতির মেয়ে ক্ষতিপূরণ এবং বাড়ি নির্মাণে মজুরির জন্য জবকার্ড পেলেন, তার তদন্ত দাবি করছি আমরা।’’ বিডিও অভিজিৎ হালদারের দাবি, ‘‘অভিযোগপত্র হাতে পাইনি। পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’
অনিমার দাবি, সুজাতার বিয়ে হয়েছিল বেঙ্গাই গ্রামে। কিন্তু স্বামী তাঁর সঙ্গে থাকেন না। চার বছরের ছেলেকে নিয়ে বছর দু’য়েক ধরে তিনি ইদলবাটি গ্রামে বাপের বাড়িতে থাকেন। অনিমা বলেন, ‘‘আমাদের জমি-জিরেত নেই। বাড়ির যে অংশে মেয়ের থাকার ব্যবস্থা করেছি, গত জানুয়ারি মাসে তার একাংশ দুষ্কৃতীরা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল। আমপানে ঘরের অ্যাসবেসটসের চাল উড়ে গিয়েছে। সভাপতি বলে কী আমার দুঃস্থ মেয়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নয়! এক জন মা তার বাচ্চাকে মানুষ করতে যদি ১০০ দিনের কাজ করেন, তাতেই বা আপত্তি কোথায়?’’
সুজাতা জানান, ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা বাদে পনেরো দিন কাজের জন্য ৩০৬০ টাকা পেয়েছেন। অনিমার দাবি, তাঁরা যে গরিব, মুখ্যমন্ত্রীও তা জানেন। তাঁর স্বামী দিনমজুর। তিনি ঝুড়ি বুনতেন। বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাতা পান। গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের প্রধান মেনকা মালিক বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত থেকে সভাপতির মেয়ের নাম পাঠানো হয়নি। সরাসরি ব্লক প্রশাসন থেকে হয়ে থাকতে পারে। জবকার্ডের বিষয়টাও আমার জানা নেই।’’