যত্নে: হাসপাতালে সদ্যোজাত। নিজস্ব চিত্র
প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছেন এক ভবঘুরে। পাশ দিয়ে অনেকেই হেঁটে চলে যাচ্ছে। কেউ বা দাঁড়িয়ে দেখছে কিন্তু কিছু করছে না। পুলিশের দেখা নেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী রইল দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার উলুবেড়িয়া স্টেশন। এখানেই শেষ নয়। রাত ১১টা নাগাদ ওই মহিলার প্রসবের পরও পুলিশ বা স্টেশনের কোনও কর্মীর দেখা মেলেনি। নিত্যযাত্রীদের একাংশ স্টেশন মাস্টারের কাছে বিক্ষোভ দেখালে তড়িঘড়ি সেখানে আসে রেল পুলিশ। সদ্যোজাত-সহ বছর পঁয়ত্রিশের ওই ভবঘুরেকে নিয়ে যাওয়া হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে।
নিত্যযাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় ওই ভবঘুরের। সেই অবস্থায় প্রায় চার ঘণ্টা পড়ে থাকার পর রাত দশটায় প্রসব করেন ওই মহিলা। স্টেশন থেকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে। শেখ সামিম নামে এক যাত্রীর ক্ষোভ, ‘‘যদি ওই মহিলা মারা যেতেন, তাহলে তার দায় কে নিত?’’
উলুবেড়িয়া স্টেশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খবরটা পরে পেয়েছি। তাই হাসপাতালে নিয়ে যেতে একটু সময় লেগেছে।’’ স্টেশনে এক মহিলা প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন প্রায় চার ঘণ্টা ধরে। অথচ সেই খবরটা কোনও রেলকর্মী পেলেন না কেন? উত্তর মেলেনি। রেল পুলিশ জানিয়েছে, ওই ভবঘুরের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করা হয়েছে। যদি মহিলার পরিচয় জানা না যায়, তাহলে তাঁদের হোমে পাঠানো হবে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার সুদীপরঞ্জন খাঁড়া বলেন, ‘‘ভবঘুরের নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মা ও শিশু দু’জনেই সুস্থ রয়েছেন।’’