এই সেই প্রতিশ্রুতি পত্র। —নিজস্ব চিত্র
পুজো মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখতে মণ্ডপের সামনে নির্দিষ্ট দূরত্বে ব্যারিকেড তৈরি করতে হবে। পুজো মামলায় সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ মেনে চলতে পুজো উদ্যোক্তাদের ‘প্রতিশ্রুতিপত্রে’র (চলতি কথায় মুচলেকা) ছাপানো বয়ান বিলি করা ছাড়া প্রশাসনের তরফে তেমন কোনও উদ্যোগ মঙ্গলবার চোখে পড়েনি।
হাওড়া ও হুগলির কয়েকটি জায়গায় পুলিশকর্তারা হাতেগোনা কয়েকটি পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করেন সেই প্রক্রিয়া সার্বিক ছিল না বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর। কয়েকটি জায়গায় অবশ্য আদালতের নির্দেশ মেনে পুজো করার জন্য পুলিশের তরফে প্রচার চলে।
এ দিন দুই জেলার পুলিশ প্রশাসনের তরফে পুজো উদ্যোক্তাদের মুচলেকার লিখিত বয়ান বিলি হয়। সেখানে ‘আদালতের নির্দেশ মেনে পুজো করতে বাধ্য’ থাকায় কথা লেখা রয়েছে। রাত পর্যন্ত হাওড়া গ্রামীণ এলাকার সব পুজো কমিটি মুচলেকার ছাপানো বয়ান পায়নি বলে খবর। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অনলাইনে যে সব পুজো কমিটি পুজোর অনুমতি চেয়েছিল, আপাতত তাদের খবর পাঠিয়ে মুচলেকায় সই করানো হচ্ছে।
বিকেলে হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য ১৪টি ব্লকের বিডিও-র সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। সূত্রের খবর, বিডিও-সহ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের ছুটি বাতিল করার কথা বৈঠকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, কোভিড পরীক্ষা, করোনা আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো, জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুল্যান্স প্রস্তুত রাখার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের কী করণীয়, সে নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলাশাসক এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ওই বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল থেকে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। তাই কোনও আলোচনা হয়নি।
গ্রামীণ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দু’য়েকটি থানা এলাকায় মাইক প্রচার করা হয়। তাতে কোভিড-সতর্কতা এবং হাইকোর্টের রায় মেনে চলারও নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মাইক প্রচার করতে গিয়ে কয়েক জায়গায় পুজো কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। পুজো কমিটির লোকজন পুলিশকে বলে, তাঁদের মণ্ডপ রাস্তার ঠিক ধারে। আদালতের নির্দেশ মেনে ৫ বা ১০ মিটার দূরে ব্যারিকেড করলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কী করবেন? পুলিশের এক কর্তা তাঁদের জানান, যেখানে এমন সমস্যা রয়েছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটিগুলিকে বিকল্প পথ খুঁজে নিতে বলা হয়েছে। স্পষ্ট করে বলা হয়েছে হাইকোর্টের রায় মানতেই হবে।
আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে এ দিন প্রশাসনের সঙ্গে পুজো কমিটিগুলির বৈঠক হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। কয়েকটি পুজো কমিটির কর্তা বলেন, ‘‘মুচলেকার ফর্ম ছাড়া প্রশাসনের থেকে আলাদা কোনও নির্দেশিকা পাইনি। তাও সেই ফর্মে হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে কী করতে হবে, তার সবিস্তার উল্লেখ নেই।’’
হুগলির শিল্পাঞ্চলে কয়েকটি পুজো মণ্ডপ ঘুরে দেখেন পুলিশকর্তারা। আদালতের রায় মেনে চলার মুচলেকা বিলি হয়। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আদালত ও পুলিশের নির্দেশ মানতেই হবে। আদালতের রায়ের নির্যাস পুজো কমিটিগুলিকে দেওয়া হয়।